মহুয়া

     সেদিন তাহারি মর্মর-সনে

     কী ব্যথা মিশানু, জানে দুইজনে ;

মাথার উপরে উড়ে গেল কোন্‌ পাখি

হতাশ পাখার হাহাকাররেখা আঁকি।

 

তপ্ত বালুরে ভর্ৎসিয়া মুহু মুহু

তাপিত বাতাস চিৎকারি উঠে হুহু ;

     ধূলির ঘূর্ণি, যেন বেঁকে বেঁকে

     শাপ-লাগা প্রেত নাচে থেকে থেকে ;

রূঢ় রুদ্র রিক্তের মাঝখানে

দুইটি প্রহর ভরেছিনু প্রাণে গানে।

 

দিন শেষ হল, চলে যেতে হল একা,

বলিনু তোমারে, আরবার হবে দেখা।

     শুনে হেসেছিলে হাসিখানি ম্লান,

     তরুণ হৃদয়ে যেন তুমি জান'

অসীমের বুকে অনাদি বিষাদখানি

আছে সারাখন মুখে আবরণ টানি।

তার পরে কত দিন চলে গেল মিছে

একটি দিনেরে দলিয়া পায়ের নীচে।

 

বহু পরে যবে ফিরিলাম প্রিয়ে,

     এ পথে আসিতে দেখি চমকিয়ে

আছে সেই কূপ, আছে সে যুগলতরু।

তুমি নাই, আছে তৃষিত স্মৃতির মরু।

 

এ কূপের তলে মোর যক্ষের ধন

একটি দিনের দুর্লভ সেইক্ষন

     চিরকাল ভরি রহিল লুকানো,

     ওগো অগোচরা জান নাহি জান ;

আর কোনো দিনে অন্য যুগের প্রিয়া

তারে আর-কারে দিবে কি উদ্ধারিয়া।