মহুয়া

     চিত্রলিপি, কুসুমেরি বিচিত্র অক্ষরে ;

          ধরণী যৌবনগর্বভরে

     আকাশেরে নিমন্ত্রণ করে যবে

               উদ্দাম উৎসবে ;

     কবির বীণার তন্ত্র যে বসন্তে ছিঁড়ে যেতে চাহে

              প্রমত্ত উৎসাহে।

          আকাশে বাতাসে

          বর্ণের গন্ধের উচ্চহাসে

              ধৈর্য নাহি রহে। —

          নহে নহে, সেদিন তো নহে।

 

     যেদিন আশ্বিনে শুভক্ষণে

আকাশের সমারোহ ধরণীতে পূর্ণ হয় ধনে।

          প্রাচুর্যপ্রশান্ত তট পেয়েছে সঙ্গিনী

                   তরঙ্গিণী —

          তপস্বিনী সে-যে, তার গম্ভীর প্রবাহে

              সমুদ্রবন্দনাগান গাহে।

     মুছিয়াছে নীলাম্বর বাষ্পসিক্ত চোখ

     বন্ধমুক্ত নির্মল আলোক ।

              বনলক্ষ্মী শুভব্রতা

শুভ্রের ধেয়ানে তার মেলিয়াছে অম্লান শুভ্রতা

              আকাশে আকাশে

              শেফালি মালতী কুন্দে কাশে।

অপ্রগল্‌ভা ধরিত্রী-সে প্রণামে লুণ্ঠিত,

  অপ্রগল্‌ভা ধরিপূজারিনী নিরবগুণ্ঠিত,

আলোকের আশীর্বাদে শিশিরের স্নানে

     দাহহীন শান্তি তার প্রাণে।

 

     দিগন্তের পথ বাহি

                   শূন্যে চাহি

     রিক্তবিত্ত শুভ্র মেঘ সন্ন্যাসী উদাসী

গৌরীশঙ্করের তীর্থে চলিয়াছে ভাসি।