মানসী
 আকাশেতে পারাবারে           দাঁড়ায়েছে এক ধারে
                    এক ধারে নারী—
           দুর্বল শিশুটি তার কে লইবে কাড়ি?

  এ বল কোথায় পেলে!          আপন কোলের ছেলে
                    এত ক’রে টানে!
    এ নিষ্ঠুর জড়স্রোতে            প্রেম এল কোথা হতে
                    মানবের প্রাণে!
    নৈরাশ্য কভু না জানে,           বিপত্তি কিছু না মানে,
               অপূর্ব-অমৃত-পানে অনন্ত নবীন—
    এমন মায়ের প্রাণ                  যে বিশ্বের কোনোখান
             তিলেক পেয়েছে স্থান সে কি মাতৃহীন?
    এ প্রলয়-মাঝখানে                  অবলা জননী-প্রাণে
                      স্নেহ মৃত্যুঞ্জয়ী—
           এ স্নেহ জাগায়ে রাখে কোন্‌ স্নেহময়ী?

 

  পাশাপাশি এক ঠাঁই           দয়া আছে, দয়া নাই—
                    বিষম সংশয়।
    মহাশঙ্কা মহা-আশা                একত্র বেঁধেছে বাসা,
                    এক-সাথে রয়।
    কে বা সত্য, কে বা মিছে,     নিশিদিন আকুলিছে,
         কভু ঊর্ধ্বে কভু নীচে টানিছে হৃদয়।
    জড় দৈত্য শক্তি হানে,       মিনতি নাহিক মানে—
         প্রেম এসে কোলে টানে, দূর করে ভয়।
    এ কি দুই দেবতার                দ্যূতখেলা অনিবার
                    ভাঙাগড়াময়?
               চিরদিন অন্তহীন জয়পরাজয়?