কথা

                কিছুই অভাব তব নাহি —

হৃদয়ে হৃদয়ে তবু                   ভিক্ষা মাগি ফির, প্রভু,

                সবার সর্বস্বধন চাহি।’

 

অবশেষে দিবসান্তে                 নগরের এক প্রান্তে

               নদীকূলে সন্ধ্যাস্নান সারি —

ভিক্ষা - অন্ন রাঁধি সুখে              গুরু কিছু দিলা মুখে,

               প্রসাদ পাইল শিষ্য তাঁরি।

রাজা তবে কহে হাসি,            ‘ নৃপতির গর্ব নাশি

               করিয়াছ পথের ভিক্ষুক —

প্রস্তুত রয়েছে দাস,                 আরো কিবা অভিলাষ —

                গুরু - কাছে লব গুরু দুখ।’

 

গুরু কহে, ‘ তবে শোন্‌,             করিলি কঠিন পণ,

                অনুরূপ নিতে হবে ভার —

এই আমি দিনু কয়ে                মোর নামে মোর হয়ে

                রাজ্য তুমি লহ পুনর্বার।

তোমারে করিল বিধি               ভিক্ষুকের প্রতিনিধি,

                 রাজ্যেশ্বর দীন উদাসীন।

পালিবে যে রাজধর্ম                 জেনো তাহা মোর কর্ম,

                 রাজ্য লয়ে রবে রাজ্যহীন।’

 

‘ বৎস, তবে এই লহো             মোর আশীর্বাদসহ

                 আমার গেরুয়া গাত্রবাস —

বৈরাগীর উত্তরীয়                   পতাকা করিয়া নিয়ো '

                 কহিলেন গুরু রামদাস।

নৃপশিষ্য নতশিরে                  বসি রহে নদীতীরে,

                 চিন্তারাশি ঘনায়ে ললাটে।

থামিল রাখালবেণু,                 গোঠে ফিরে গেল ধেনু,

                 পরপারে সূর্য গেল পাটে।

 

পূরবীতে ধরি তান                  একমনে রচি গান