জীবনদেবতা

     ওহে অন্তরতম,

মিটেছে কি তব সকল তিয়াষ

     আসি অন্তরে মম।

দুঃখসুখের লক্ষ ধারায়

পাত্র ভরিয়া দিয়েছি তোমায়,

নিঠুর পীড়নে নিঙাড়ি বক্ষ

     দলিত দ্রাক্ষাসম।

কত যে বরন কত যে গন্ধ

কত যে রাগিণী কত যে ছন্দ

গাঁথিয়া গাঁথিয়া করেছি বয়ন

     বাসরশয়ন তব —

গলায়ে গলায়ে বাসনার সোনা

প্রতিদিন আমি করেছি রচনা

তোমার ক্ষণিক খেলার লাগিয়া

     মুরতি নিত্যনব।

 

আপনি বরিয়া লয়েছিলে মোরে

     না জানি কিসের আশে।

লেগেছে কি ভালো, হে জীবননাথ,

আমার রজনী আমার প্রভাত

আমার নর্ম আমার কর্ম

     তোমার বিজন বাসে।

বরষা শরতে বসন্তে শীতে

ধ্বনিয়াছে হিয়া যত সংগীতে

শুনেছ কি তাহা একেলা বসিয়া

     আপন সিংহাসনে।

মানসকুসুম তুলি অঞ্চলে

গেঁথেছ কি মালা, পরেছ কি গলে,

আপনার মনে করেছ ভ্রমণ

     মম যৌবনবনে।