শিশু ভোলানাথ

ওরে মোর শিশু ভোলানাথ,

       তুলি দুই হাত

যেখানে করিস পদপাত

বিষম তাণ্ডবে তোর লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় সব ;

          আপন বিভব

আপনি করিস নষ্ট হেলাভরে ;

          প্রলয়ের ঘূর্ণচক্র-’পরে

চূর্ণ খেলেনার ধূলি উড়ে দিকে দিকে ;

          আপন সৃষ্টিকে

ধ্বংস হতে ধ্বংসমাঝে মুক্তি দিস অনর্গল,

খেলারে করিস রক্ষা ছিন্ন করি খেলেনা - শৃঙ্খল।

 

অকিঞ্চন, তোর কাছে কিছুরই তো কোনো মূল্য নাই,

          রচিস যা তোর ইচ্ছা তাই

          যাহা খুশি তাই দিয়ে,

তার পর ভুলে যাস যাহা ইচ্ছা তাই নিয়ে।

আবরণ তোরে নাহি পারে সম্বরিতে দিগম্বর,

           স্রস্ত ছিন্ন পড়ে ধূলি-’পর।

লজ্জাহীন সজ্জাহীন বিত্তহীন আপনা - বিস্মৃত,

          অন্তরে ঐশ্বর্য তোর, অন্তরে অমৃত।

দারিদ্র্য করে না দীন, ধূলি তোরে করে না অশুচি,

নৃত্যের বিক্ষোভে তোর সব গ্লানি নিত্য যায় ঘুচি।

 

ওরে শিশু ভোলানাথ, মোরে ভক্ত ব’লে

           নে রে তোর তাণ্ডবের দলে ;

          দে রে চিত্তে মোর

          সকল - ভোলার ওই ঘোর,

খেলেনা - ভাঙার খেলা দে আমারে বলি।

আপন সৃষ্টির বন্ধ আপনি ছিঁড়িয়া যদি চলি

          তবে তোর মত্ত নর্তনের চালে

আমার সকল গান ছন্দে ছন্দে মিলে যাবে তালে।