পলাতকা

        আমি ছাড়া সকল ছেলেই গেছে যে যার দেশে,

                   একলা থাকি “ মেস্‌ ” -এ।

        সকাল - সাঁঝে মাঝে মাঝে বাজাই ঘরের কোণে

                মেঠো গানের সুর যা ছিল মনে।

 

 

               ওই যে ওদের কালো মেয়ে নন্দরানী

            যেমনতরো ওর ভাঙা ঐ জানলাখানি,

              যেখানে ওর কালো চোখের তারা

              কালো আকাশতলে দিশেহারা ;

              যেখানে ওর এলোচুলের স্তরে স্তরে

               বাতাস এসে করত খেলা আলস - ভরে ;      

     যেখানে ওর গভীর মনের নীরব কথাখানি

আপন দোসর খুঁজে পেত আলোর নীরব বাণী ;

          তেমনি আমার বাঁশের বাঁশি আপনভোলা,

চারদিকে মোর চাপা দেয়াল, ওই বাঁশিটি আমার জানলা খোলা।

              ওই খানেতেই গুটিকয়েক তান

     ওই মেয়েটির সঙ্গে আমার ঘুচিয়ে দিত অসীম ব্যবধান।

          এ সংসারে অচেনাদের ছায়ার মতন আনাগোনা

কেবল বাঁশির সুরের দেশে দুই অজানার রইল জানাশোনা।

যে-কথাটা কান্না হয়ে বোবার মতন ঘুরে বেড়ায় বুকে

                   উঠল ফুটে বাঁশির মুখে।

          বাঁশির ধারেই একটু আলো, একটুখানি হাওয়া,

যে-পাওয়াটি যায় না দেখা স্পর্শ-অতীত একটুকু সেই পাওয়া।