চিত্রা

তাহারে বাঁধিতে লোলুপচিত্ত

    ছুটিছে বৃদ্ধবালকে।

এ যেন বিপুল যজ্ঞকুণ্ড,

আকাশে আলোড়ি শিখার শুণ্ড

হোমের অগ্নি মেলিছে তুণ্ড

    ক্ষুধার দহন জ্বালিয়া।

নরনারী সবে আনিয়া তূর্ণ

প্রাণের পাত্র করিয়া চূর্ণ

বহ্নির মুখে দিতেছে পূর্ণ

    জীবন-আহুতি ঢালিয়া।

চারি দিকে ঘিরি যতেক ভক্ত

স্বর্ণবরনমরণাসক্ত

দিতেছে অস্থি, দিতেছে রক্ত,

    সকল শক্তিসাধনা।

জ্বলি উঠে শিখা ভীষণ মন্দ্রে,

ধূমায়ে শূন্য রন্ধ্রে রন্ধ্রে

লুপ্ত করিছে সূর্যচন্দ্রে

    বিশ্বব্যাপিনী দাহনা।

বায়ুদলবল হইয়া ক্ষিপ্ত

ঘিরি ঘিরি সেই অনল দীপ্ত

কাঁদিয়া ফিরিছে অপরিতৃপ্ত,

    ফুঁসিয়া উষ্ণ শ্বসনে।

যেন প্রসারিয়া কাতর পক্ষ

কেঁদে উড়ে আসে লক্ষ লক্ষ

পক্ষীজননী, করিয়া লক্ষ্য

    খাণ্ডব-হুত-অশনে।

বিপ্র ক্ষত্র বৈশ্য শূদ্র

মিলিয়া সকলে মহৎ ক্ষুদ্র

খুলেছে জীবনযজ্ঞ রুদ্র

    আবালবৃদ্ধরমণী।

হেরি এ বিপুল দহনরঙ্গ

আকুল হৃদয় যেন পতঙ্গ