কর্মফল
ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ

হরেন। দাদা, তুমি অনেকক্ষণ ধরে ও কী লিখছো, কাকে লিখছ বলো-না।

সতীশ। যা যা, তোর সে খবরে কাজ কী, তুই খেলা কর্ গে যা।

হরেন। দেখি-না কী লিখছ— আমি আজকাল পড়তে পারি।

সতীশ। হরেন, তুই আমাকে বিরক্ত করিস নে বলছি— যা তুই।

হরেন। ভয়ে আকার ভা, ল, ভাল, বয়ে আকার বা, সয়ে আকার সা, ভালোবাসা। দাদা, কি ভালোবাসার কথা লিখছ বলো-না। তুমিও কাঁচা পেয়ারা ভালোবাস বুঝি। আমিও বাসি।

সতীশ। আঃ হরেন,অত চেঁচাস নে, ভালোবাসার কথা আমি লিখি নি।

হরেন। অ্যাঁ! মিথ্যা কথা বলছ! আমি যে পড়লেম ভয়ে আকার ভাল,ভাল, বয়ে আকার সয়ে আকার ভালোবাসা। আচ্ছা, মাকে ডাকি, তাঁকে দেখাও।

সতীশ। না না, মাকে ডাকতে হবে না। লক্ষ্মীটি, তুই একটু খেলা করতে যা,আমি এইটে শেষ করি।

হরেন। এটা কী দাদা। এ যে ফুলের তোড়া, আমি নেব।

সতীশ। ওতে হাত দিস নে, হাত দিস নে, ছিঁড়ে ফেলবি।

হরেন। না, আমি ছিঁড়ে ফেলব না, আমাকে দাও-না।

সতীশ। খোকা, কাল তোকে আমি অনেক তোড়া এনে দেব, এটা থাক্‌।

হরেন। দাদা, এটা বেশ, আমি এইটেই নেব।

সতীশ। না, এ আর-একজনের জিনিস, আমি তোকে দিতে পারব না।

হরেন। অ্যাঁ, মিথ্যে কথা! আমি তোমাকে লজঞ্জুস আনতে বলেছিলেম, তুমি সেই টাকায় তোড়া কিনে এনেছ— তাই বৈকি, আর-একজনের জিনিস বৈকি।

সতীশ। হরেন, লক্ষ্মী ভাই, তুই একটুখানি চুপ কর্, চিঠিখানা শেষ করে ফেলি। কাল তোকে আমি অনেক লজঞ্জুস কিনে এনে দেব।

হরেন। আচ্ছা, তুমি কী লিখছ আমাকে দেখাও।

সতীশ। আচ্ছা দেখাব, আগে লেখাটা শেষ করি।

হরেন। তবে আমিও লিখি।

স্লেট লইয়া চিৎকারস্বরে


ভয়ে আকার ভা, ল, ভাল, বয়ে আকার বা সয়ে আকার সা ভালোবাসা।

সতীশ। চুপ চুপ, অত চিৎকার করিস নে। আঃ, থাম্‌ থাম্‌।

হরেন। তবে আমাকে তোড়াটা দাও।

সতীশ। আচ্ছা নে, কিন্তু খবরদার ছিঁড়িস নে— ও কী করলি! যা বারণ করলেম তাই! ফুলটা ছিঁড়ে ফেললি! এমন বদ