ভগ্নহৃদয়
সেই পথ দিয়া যাইবে তো কবি?
        আয় ত্বরা করে তবে।
বল্‌ দিখি তোরা হল কি আমার!
        যখন কবির সুমুখে থাকি
একটিও কথা পারি নে, বলিতে,
        পারি নে তুলিতে আনত আঁখি!
কতবার, সখি, করিয়াছি মনে
        পরিহাস করি কহিব কথা—
নিদারুণ হাসি হাসিয়া হাসিয়া
        হৃদয়ে হৃদয়ে দিব গো ব্যথা,
কৃষ্ণহীরা-সম কৃষ্ণ আঁখি-তারা
আঁধার-আগার হতে আলো-ধারা
হানিবে হেথায়, হানিবে হোথায়
        আকুলিয়া দশ দিশ—
মুরছিয়া তার পড়িবেক মন,
মুদিয়া আসিবে অবশ নয়ন,
যতই ঢালিব এ অধর হতে
        মিষ্ট সুধাময় বিষ!
কিন্তু কি করে সে চেয়ে থাকে, সখি,
        না জানি নয়নে কি আছে জ্যোতি!
এমন সে গান গায় ধীরে ধীরে,
        কথা কয়, সখি, মৃদুল অতি—
মুখেতে আমার কথা নাহি ফুটে,
        চাহিতে পারি নে আঁখির পানে,
হাসির লহরী খেলে না অধরে,
        নয়নে তড়িৎ নাহিক হানে!
আয় ত্বরা করে— বেলা হয়ে এল,
         অস্তাচলে যায় রবি,
পথের ধারেতে বসি রব’ মোরা
        সেই পথে যাবে কবি!