প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
ফুলি। ( দ্রুতবেগে আসিয়া ) কাকা, কাকা!
নীরদ। ( বুকে টানিয়া লইয়া ) মা আমার, বাছা আমার!
ফুলি। এত দিন কোথায় ছিলে কাকা?
নীরদ। সে কথা আর জিজ্ঞাসা করিস নে ফুলি! আবার আমি তোদের কাছে এসেছি,আর আমি তোদের ছেড়ে কোথাও যাব না!
ফুলি। কাকা,একবার দিদির কাছে চল!
নীরদ। কেন ফুলি?
ফুলি। একবার দেখ’সে দিদি কী হয়ে গেছে!
নবীন। এই যে নীরদ, এসেছ? আমরা সব স্বার্থপর কি অন্ধ হয়েই ছিলেম নীরদ! একবার নলিনীর কাছে চল।
নীরদ। কেন নবীন!
নবীন। একবার তার সঙ্গে একটি কথা কও’সে! তোমার একটি কথা শোনবার জন্য সে আজ কত দিন ধ’রে অপেক্ষা ক’রে আছে! কত দিন কত মাস ধ’রে জানলার কাছে ব’সে সে পথের পানে চেয়ে আছে, তোমার দেখা পায় নি! তার সে খেলাধূলা কিছুই নেই,একেবারে ছায়ার মতো হয়ে গেছে! কত দিন পরে আজ আবার সে এই বাগানে এয়েছে,কিন্তু তার সেই হাসিটি কোথায় রেখে এল? এ বাগানের মধ্যে তার অমন করুণ ম্লান মুখ কি চোখে দেখা যায়! এই বাগানেই তোমার সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয়েছিল, এই বাগানেই বুঝি শেষ দেখা হবে!
নীরদ। নলিনী!
নীরদ। নলিনী !
নলিনী। ( ধীরে ) কি নীরদ!
নীরদ। (নলিনীর হাত ধরিয়া) আর কিছু দিন আগে কেন আমার সঙ্গে কথা কইলে না নলিনী! আর কিছু দিন আগে কেন ঐ সুধামাখা স্বরে আমার নাম ধ’রে ডাক নি! আজ – আজ এই অসময়ে কেন ডাকলে? নলিনী নলিনী –
নীরজা। এ কি হল, এ কি হল!
ফুলি। ( তাড়াতাড়ি ) দিদি – দিদি! – কাকা, দিদির কি হল?
নীরজা: নলিনীর মাথা কোলে রাখিয়া বাতাস-করণ নলিনীর মূর্চ্ছাভঙ্গ
নীরজা। আমি তোর দিদি হই বোন – আর বেশী দিন তোকে দুঃখ পেতে হবে না,আমি তোদের মিলন করিয়ে দেব।
নলিনী। ( নীরজার মুখের দিকে চাহিয়া ) তুমি কে গা, তুমি কাঁদছ কেন?
নীরজা। আমি তোর দিদি হই বোন!