প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
“আয়া কি ঠিকমত পারবে এ-সব কাজ।”
“ভারি তো কাজ, খুব পারবে। আরো ভালোই পারবে।”
“কিন্তু—”
“কিন্তু আবার কিসের। আয়া আয়া।”
“অত উত্তেজিত হোয়ো না। একটা বিপদ ঘটাবে দেখছি।”
“আমি আয়াকে ডেকে দিচ্ছি” বলে সরলা চলে গেল। নীরজার কথার যে একটা প্রতিবাদ করবে, সেও তার মুখে এল না। আদিত্যও মনে মনে আশ্চর্য হল, ভাবলে সরলাকে কি সত্যিই অন্যায় খাটানো হচ্ছে।
ওষুধপথ্য হয়ে গেলে আদিত্য আয়াকে বললে, “সরলাদিদিকে ডেকে দাও।”
“কথায় কথায় কেবলই সরলাদিদি, বেচারাকে তুমি অস্থির করে তুলবে দেখছি।”
“কাজের কথা আছে।”
“থাক্-না এখন কাজের কথা।”
“বেশিক্ষণ লাগবে না।”
“সরলা মেয়েমানুষ, ওর সঙ্গে এত কাজের কথা কিসের, তার চেয়ে হলা মালীকে ডাকো-না।”
“তোমাকে বিয়ে করবার পর থেকে একটা কথা আবিষ্কার করেছি যে, মেয়েরাই কাজের, পুরুষেরা হাড়ে অকেজো। আমরা কাজ করি দায়ে পড়ে, তোমরা কাজ কর প্রাণের উৎসাহে। এই সম্বন্ধে একটা থীসিস লিখব মনে করেছি। আমার ডায়রি থেকে বিস্তর উদাহরণ পাওয়া যাবে।”
“সেই মেয়েকেই আজ তার প্রাণের কাজ থেকে বঞ্চিত করেছে যে-বিধাতা, তাকে কী বলে নিন্দে করব। ভূমিকম্পে হুড়মুড় করে আমার কাজের চূড়া পড়েছে ভেঙে তাই তো পোড়োবাড়িতে ভূতের বাসা হল।”
“সরলা এল। আদিত্য জিজ্ঞাসা করলে, “অর্কিড-ঘরের কাজ হয়ে গেছে?”
“হাঁ, হয়ে গেছে।”
“সবগুলো?”
“সবগুলোই।”
“আর গোলাপের কাটিং?”
“মালী তার জমি তৈরী করছে।”
“জমি! সে তো আমি আগেই তৈরি করে রেখেছি। হলা মালীর উপর ভার দিয়েছ, তা হলেই দাঁতন- কাঠির চাষ হবে আর কী।”
কথাটাতে তাড়াতাড়ি বাধা দিয়ে নীরজা বললে, “সরলা, যাও তো কমলালেবুর রস করে নিয়ে এসো গে, তাতে একটু আদার রস দিয়ো, আর মধু।”
সরলা মাথা হেঁট করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
নীরজা জিজ্ঞাসা করলে, “আজ তুমি ভোরে উঠেছিলে, যেমন আমরা রোজ উঠতুম?”
“হাঁ, উঠেছিলুম।”
“ঘড়িতে তেমনি এলার্মের দম দেওয়া ছিল?”