শৈশবসঙ্গীত
কিছুতে ভ্রূক্ষেপ নাই মনে,
গাছের কাঁটার
ধার,
ছিঁড়িছে আঁচল তার,
লতাপাশ বাঁধিছে চরণে।
একাকী
আপনমনে
ভ্রমিতে ভ্রমিতে বনে
যাইত সে তটিনীর তীরে—
লতায় পাতায়
গাছে— আঁধার
করিয়া আছে,
সেইখানে শুইত সুধীরে।
জলকলরবরাশি,
প্রাণের ভিতরে আসি
ঢালিত কি বিষাদের ধারা!
ফাটিয়া যাইত বুক,
বাহুতে ঢাকিয়া মুখ
কাঁদিয়া কাঁদিয়া হ’ত সারা।
কাননশৈলের
পায়ে,
মধ্যাহ্নে গাছের ছায়ে
মলিন অঞ্চলে রাখি মাথা
কত কি ভাবিত হায়, উচ্ছ্বসি উঠিত
বায়,
ঝরিয়া পড়িত শুষ্ক পাতা।
গভীর নীরব
রাতে
উঠিয়া শৈলের মাথে
বসিয়া রহিত একাকিনী—
তারা-পানে চেয়ে
চেয়ে,
কত-কি ভাবিত মেয়ে,
পড়িত কি বিষাদকাহিনী!
কি করিলে ললিতার— ঘুচিবে হৃদয়ভার
সুরেশ না পাইত ভাবিয়া—
কাতর হইয়া কত যুবা
তারে শুধাইত,
আগ্রহে অধীর তার হিয়া—
“রাখ কথা, শুন
সখি,
একবার বল দেখি
কি করিব তোমার লাগিয়া?
কি চাও, কি দিব বালা,বল গো কিসের জ্বালা?
কি করিলে জুড়াবে ও হিয়া?”
করুণ মমতা পেয়ে— সুরেশের মুখ চেয়ে
অশ্রু উচ্ছ্বসিত দরদরে—