বিয়াত্রিচে, দান্তে ও তাঁহার কাব্য

হেরিয়া অলীক ছায়া–তেমনি মানুষ

মহান সংকল্প হতে হয় গো বিরত

বৃথা ভয়ে। এ আশঙ্কা করিবারে দূর–

কহি তোরে কোথা হতে এলেম হেথায়-

প্রথমে কাহার কথা করিয়া শ্রবণ

তোরে দয়া হল মোর, কহি তোরে তাহা!

পরলোকে থাকে যারা সংশয় আঁধারে-

তাহাদের মধ্যে মোর নিবাস কহিনু।

একদা রমণী এক আহ্বানিলা মোরে-

হেন পুণ্যময় মূর্তি এমন সুন্দরী

দেখেই অমনি তাঁর মাগিনু আদেশ–

অতিশয় মৃদু আর অতি সুকোমল

দেবতার স্বরে সুর বাঁধি, কহিলেন-

জ্ঞঅয়ি উপছায়া! তুমি যাহার সুযশ

যদিন প্রকৃতি রবে, রহিবে বাঁচিয়া-

এই অনুনয় মোর করহ শ্রবণ!-

বন্ধু এক মোর (নহে বন্ধু সম্পদের)

মহারণ্যে নিদারুণ বাধা বিঘ্ন পেয়ে-

ভয়ে অভিভূত হয়ে পড়েছেন তিনি।

ভয় করি পাছে হন হেন পথহারা

আর তাঁরে একেবারে ফিরাতে না পারি!

উদ্দীপনা-বাক্যে তব, যে-কোনো উপায়ে,

ফিরাইয়া আনো, তবে লভিব বিরাম!

আসিয়াছি স্বর্গ হতে বিয়াত্রিচে আমি

প্রেম-উত্তেজনে আমি কৈনু অনুরোধ,

বর্জিল সেই বিয়াত্রিচের অনুরোধেই দান্তেকে ভ্রষ্ট-পথ হইতে ফিরাইতে আসিয়াছেন। দান্তে বর্জিলের সহিত নরক-দর্শন করিতে যাইতে আহ্লাদের সহিত সম্মত হইলেন। তৃতীয় স্বর্গে দান্তে নরকের তোরণে গিয়া উপস্থিত হইলেন। তোরণে অস্ফুট অক্ষরে লিখা আছে-

মোর মধ্য দিয়া সবে যাও দুঃখদেশে;

মোর মধ্য দিয়া যাও চির-দুঃখভোগে-

চিরকাল তরে যারা হয়েছে পতিত,

মোর মধ্য দিয়া যাও তাহাদের কাছে!

ন্যায়ের আদেশে আমি হয়েছি নির্মিত-