প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
|
![]() |
৪০
কয়েক বৎসর পূর্ব্বে Carl Scholz। তাঁহার পরিবারবর্গকে চিকাগোতে সরাইয়া আনেন, তৎপূর্ব্বে তিনি পশ্চিম ভার্জ্জিনিয়াতে বাস করিতেন। তাঁহারা বাষ্পদ্বারা উত্তাপিত একটি কক্ষ লইয়াছিলেন। প্রথম কয়েক বৎসর তিনি লক্ষ্য করিয়া দেখিলেন যে শীতের সময় সর্ব্বদাই সর্দ্দিকাশিতে তাঁহার স্ত্রী ও কন্যা ভুগিয়া হয়রান হইতেছে। ইহাও দেখিলেন যে, অন্যপ্রকার আবহাওয়ার মধ্যে তাঁহার যেসকল আসবাব মজবুত এবং শক্ত ছিল, তাহা টুক্রা টুক্রা হইয়া পড়িতেছে। বৈজ্ঞানিক প্রকৃতির মানুষ ছিলেন বলিয়া তিনি স্থির করিলেন যে, এই দুই প্রাকৃতিক ঘটনার মূল কারণ একই। তাঁহার বিশ্বাস হইল যে, তাঁহার কক্ষের বাতাস শীতের সময় অতিরিক্ত শুষ্ক থাকে। তিনি তাঁহার তাপসঞ্চার-যন্ত্রের পশ্চাতে কয়েকটি জলপূর্ণ তাম্রপাত্র জুড়িয়া দিলেন। তিনি শীঘ্রই আবিষ্কার করিলেন যে, প্রতিদিন প্রতিঘরে বাতাস এক কোয়ার্টের অধিক জল শোষণ করে। তিনি ইহাও লক্ষ্য করিলেন যে, বাড়িটির উত্তাপ আরামের ব্যাঘাতজনক হইয়া উঠিল এবং সর্দ্দিকাশির প্রবণতা দূর হইল।
৪১
স্বাস্থ্যবান্ থাকিতে হইলে, বাসকক্ষে প্রতি ঘন্টায় বায়ুর পরিবর্ত্তন আবশ্যক। বাতাসটা তো কোনো জায়গা হইতে আসা চাই’ই। স্বভাবতই ইহা বাহির হইতে পাওয়া যায়; অতএব বাসার মধ্যে ইহা ঠাণ্ডা শুষ্ক অবস্থায় প্রবেশ করে। যদি তাজা বাতাস প্রবেশ করে, তবে বাসি হাওয়াকে বাহির হইয়া যাইতে হয়। এই হাওয়া গরম এবং আর্দ্র হইয়া যায়। প্রথমে ইহা ঘরের বাতাসের সমস্ত আর্দ্রতা গ্রহণ করে। ইহাও যথেষ্ট নহে, পরে ইহা আমাদের চর্ম্মকে আক্রমণ করে। তখন আমাদের চর্ম্ম হইতে ভাপ উঠিতেছে বোধ করি। তখন আমরা বলি, আমাদের শীত লাগিতেছে। তৎক্ষণাৎ আমরা আরও বেশি উত্তাপ চাই। কাজেই আমরা বড়ো করিয়া আগুন জ্বালাই। বাতাসকে আমাদের চর্ম্ম হইতে জলপান করিতে না দিয়া যদি জলপাত্র হইতে দিই, তবে অবিকল একই ফল পাওয়া যায়।
৪২
আর মাস কয়েকের মধ্যেই টিনের পাত্রে রক্ষিত তিমিমাংস ইংলণ্ডের বাজারে উঠিবে। যেমন করিয়া স্যামন মাছ সংরক্ষণ করা হয়, ঠিক তেমনি করিয়া ব্রিটিশ কলম্বিয়ার কীউকাউট দ্বীপে এই প্রকাণ্ড সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী জন্তুর মাংস টিনে ভরা হইতেছে। এই একটিমাত্র কারখানা হইতে আগামী মরসুমের সময় ত্রিশ হাজার বাক্স মাল প্রস্তুত হইবে; ইহার প্রত্যেকটিতে তিমিমাংসের এক পাউণ্ড টিন চব্বিশটি করিয়া থাকিবে। এই টিনে রক্ষিত তিমিমাংসের বড়ো এক অংশ শরৎকাল নাগাইদ এ দেশে আসিয়া পৌঁছিবে এরূপ আশা আছে। ক্যানেডা এবং ইউনাইটেড ষ্টেট্স্ এই উভয় দেশেই আজ এই অতিকায় জন্তুর মাংস লোকে নিয়মিতভাবে আহার করিতেছে।
৪৩
এইখানে একটি কথা মনে রাখিতে হইবে যে, তিমি মৎস্যই নহে, উষ্ণশোণিত জীব। সে নির্ম্মলখাদ্য-ভোজী। কাঁকড়া, গলদাচিংড়ী, বাইন প্রভৃতি যাহা সাধারণতঃ আমরা পছন্দ করিয়া থাকি, তাহার সম্বন্ধে কিন্তু এ কথা বলা চলে না। ইহার মাংস স্বাদু এবং ক্ষুধাবর্দ্ধক দুইই। আমরা খাবার জিনিষের মতোই যে কেবল তিমির ব্যবহার করিতেছি তাহা নহে, উহার ত্বক্কে খুব মজবুত চামড়ায় পরিণত করা যাইতে পারে, ইহাও আবিষ্কার করা হইয়াছে। একটিমাত্র তিমি হইতে, তিন হইতে চারি হাজার বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়।