প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
৩২
গলীয় নায়ক। আমারই জন্য?
হানিবাল। তোমারই জন্য।
গলীয় নায়ক। এই চুনি, পান্না এবং ঐ রক্তবর্ণ -
হনিবাল। হাঁ, হাঁ।
গলীয় নায়ক। হে মহামহিম হানিবাল! অপরাজেয় বীর! হে আমার সৌভাগ্যবান্ দেশ, এমনতরো সহায় এবং রক্ষক তুমি পাইয়াছ! আমি শপথ করিয়া অক্ষয় কৃতজ্ঞতা স্বীকার করিতেছি
–হাঁ, এমন কৃতজ্ঞতা, প্রীতি, নিষ্ঠা, যাহা অসীমকালকেও অতিক্রম করে!
৩৩
প্রিয় –
তোমার চিঠি এইমাত্র পাইলাম এবং এত দিনে পাইয়া অত্যন্ত আনন্দিত হইলাম। চিঠির জন্য আমি বহুদিন ধরিয়া অপেক্ষা করিতেছিলাম, কিন্তু ইংলণ্ডে চিঠি আসিতে আজকাল যুগযুগান্তর লাগে। তুমি যে আমার স্ত্রী ও সন্তানদের খবর পাঠাইয়াছ, তাহাতে বড়ো সুখী হইলাম। ছেলেমেয়েদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হইয়াছে বলিয়া বোধ হইল এবং সেজন্য আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ; কিন্তু যদিও আমার স্ত্রীর শরীর অপেক্ষাকৃত একটু ভালো হইয়াছে, তবু তাহাতে আমি একটুও সন্তুষ্ট নই। ইংলণ্ডে ফিরিয়া না আসা পর্য্যন্ত তাঁর শরীর প্রকৃতপক্ষে ভালো হইবে না বলিয়া আশঙ্কা করি।
৩৪
তাঁর পক্ষে দরকার–শান্তিময় গৃহের আরাম; কিন্তু এই যে যুদ্ধ এখনো চলিতেছে, তাহাতে কেবল ভগবানই জানেন সে সময় কখন আসিবে। তোমার নিজের শরীরের কথা তুমি কিছুই লেখ নাই। আমি একান্ত আশা করি গরমে তুমি অতিমাত্র ক্লিষ্ট হও নাই। গরমে যে কেমন করিয়া প্রাণ বাহির করিয়া দেয় এবং ভিজা ন্যাকড়াখানার মতো নেতাইয়া ফেলে, তাহা আমি জানি। এখানে আমি বড়ো একা-একা বোধ করিতেছি এবং আলাপ করিতে পারি আমার এমন অন্তরঙ্গ বন্ধু নাই। ভাবী আশাও অন্ধকারাবৃত। সেই সব-সুদ্ধ জড়াইয়া আমি বিশেষ প্রফুল্লতা অনুভব করিতেছি না। ভারতবর্ষে আমার শরীর যেমন ছিল তাহার চেয়ে অনেক ভালো হইলেও, আমার শরীর এখনও ভালো হয় নাই। ভালোবাসা জানিয়ো, আশা করি শীঘ্রই তোমার চিঠি পাইব। তোমার স্নেহের–
৩৫
আমাদের পক্ষিশাবকরা ডিম্ব হইতে বাহির হইবার পর, অধিকাংশই প্রথম কয়েক সপ্তাহ কীট ছাড়া আর কিছুই খায় না এবং তাহাদের অনেকেই সারা জীবন কীটখাদক। শাবকেরা ভূরিভোজী এবং তাহাদের পিতামাতারা সমস্ত দিন তাহাদিগকে গড়ে প্রতি পাঁচ ছয় মিনিট অন্তর খাওয়াইয়া থাকে; এ দিকে দিবালোকের সূচনা হইতেই তাহাদের দিন সুরু হয় আর অন্ধকার না হওয়া পর্য্যন্ত তাহা শেষ হয় না। এই প্রত্যেক বারে বৃদ্ধ পাখীরা একটি হইতে বারোটি কীট লইয়া আসে, ইতিমধ্যে তাহারা নিজে যাহা খায় সেটাকে আমরা ইহার মধ্যে ধরিতেছি না। এইরূপে দেখা যাইবে একটিমাত্র পক্ষীপরিবার দিনে বহু শত কীট ভক্ষণ করে। বস্তুত সতর্ক পর্যবেক্ষণের সাহায্যে হিসাব করিয়া দেখা গেছে–একটি পক্ষীপরিবার দিনে পাঁচ শত হইতে বারো শত কীট বিনাশ করে। ঠিক সেই কীটগুলি ছাড়াও অনেক পাখী রাশি রাশি কীটডিম্ব ধ্বংস করে, অনেক সময়েই তাহার পরিমাণ দিনে বহুসহস্র হইয়া থাকে।
৩৬
আমি অধিক দূর অগ্রসর হইতে না হইতেই সূর্য্য অস্ত গেল এবং গোধূলির আলোকে আমি দুইটি পশুকে বন হইতে বাহির হইয়া পথের উপর আমার এক শত গজ আন্দাজ সম্মুখে আসিয়া দাঁড়াইতে দেখিলাম।