নীরব কবি ও অশিক্ষিত কবি

হবি কি আমার প্রিয়া, রবি মোর সাথে?

অরণ্য, প্রান্তর, নদী, পর্ব্বতগুহাতে

যত কিছু, প্রিয়তমে, সুখ পাওয়া যায়

দু-জনে মিলিয়া তাহা ভোগ করি আয়!

 

শুনিব শিখরে বসি পাখী গায় গান

নদীর শব্দ-সাথে মিশাইয়া তান;

দেখিব চাহিয়া সেই তটিনীর তীরে

রাখাল গরুর পাল চরাইয়া ফিরে।

 

রচি দিব গোলাপের শয্যা মনোমত,

সুরভি ফুলের তোড়া দিব কত শত;

গড়িব ফুলের টুপি, পরিবি মাথায়;

আঙিয়া রচিয়া দিব গাছের পাতায়।

 

লয়ে মেষশিশুদের কোমল পশম

বসন বুনিয়া দিব অতি অনুপম;

সুন্দর পাদুকা এক করিয়া রচিত

খাঁটি সোনা দিয়ে তাহা করিব খচিত।

 

কটিবন্ধ গড়ি দিব গাঁথি তৃণজাল,

মাঝেতে বসায়ে দিব একটি প্রবাল।

এই সব সুখ যদি তোর মনে ধরে

হ’ আমার প্রিয়তমা, আয় মোর ঘরে।

 

হস্তিদন্তে গড়া এক আসনের ‘পরে

আহার আনিয়া দিবে দুজনের তরে–

দেবতার উপভোগ্য, মহার্ঘ্য এমন,

রজতের পাত্রে দোঁহে করিব ভোজন।

 

রাখাল-বালক যত মিলি একত্তরে

নাচিবে গাইবে তোর আমোদের তরে।

এই সব সুখ যদি মনে ধরে তব

হ’ আমার প্রিয়তমা, এক সাথে রব’।