প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
সেই মুহূর্তেই ফস্ করে আমার মনে পড়ে গেল যে, আমি বাংলাদেশের রাজপুত্তুর।
সে কী কথা। তুমি তো—
ঐ দেখো, আবার প্রশ্ন? আমি বলছি, সেদিন ছিলুম বাংলাদেশের রাজপুত্তুর, তাই তো বেঁচে গেলুম। নইলে সে তো দূর করে তাড়িয়ে দিত আমাকে। তা না করে দিলে সোনার পেয়ালায় চা খেতে। চন্দ্রমল্লিকার সঙ্গে মেশানো সেই চা, গন্ধে আকুল করে দেয়।
তা হলে কি তোমাকে বিয়ে করল নাকি!
দেখো, ওটা বড়ো গোপন কথা। আজ পর্যন্ত কেউ জানে না।
কুসমি হাততালি দিয়ে বলে উঠল, বিয়ে নিশ্চয়ই হয়েছিল, খুব ঘটা করে হয়েছিল।
দেখলুম, বিয়েটা না হলে ও বড়ো দুঃখিত হবে। শেষকালে হল বিয়ে। হ্যাংচাও শহরের আদ্ধেক রাজত্ব আর শ্রীমতী আংচনী দেবীকে লাভ করলুম। করে—
করে কী হল। আবার বুঝি সেই উটে চড়ে বসলে?
নইলে এখানে ফিরে এসে দাদামশায় হলেম কী করে। হ্যাঁ, চড়েছিলুম— সে উট কোত্থাও যায় না। মাথার উপর দিয়ে ফুসুং পাখি গান গেয়ে চলে গেল।
ফুসুং পাখি? সে কোথায় থাকে।
কোথাও থাকে না; কিন্তু তার লেজ নীল, তার ডানা বাসন্তী, তার ঘাড়ের কাছে বাদামি, ওরা দলে দলে উড়ে গিয়ে বসল হাচাং গাছে।
হাচাং গাছের তো আমি নাম শুনি নি।
আমিও শুনি নি, তোমাকে বলতে বলতে এইমাত্র মনে পড়ল। আমার ঐ দশা, আমি আগে থাকতে তৈরি হয় নে। তখনি তখনি দেখি, তখনি তখনি বলি। আজ আমার ফুসুং পাখি উড়ে চলে গেছে সমুদ্রের
আর-এক পারে। অনেকদিন তার কোনো খবর নেই।
কিন্তু, তোমার বিয়ের কী হল। সেই রাজকন্যা?
দেখো, চুপ করে যাও। আমি কোনো জবাব দেব না। আর তা ছাড়া, তুমি দুঃখ কোরো না, তখনও তুমি জন্মাও নি— সে কথা মনে রেখো।