বিসর্জন
তার পরে দিনকত              কেটে যায় এইমত,
            তার পরে ছাপাবার পালা।
মুদ্রাযন্ত্র হতে শেষে             বাহিরায় ভদ্রবেশে,
            তার পরে মহা ঝালাপালা।
রক্তমাংস-গন্ধ পেয়ে            ক্রিটিকেরা আসে ধেয়ে,
            চারি দিকে করে কাড়াকাড়ি।
কেহ বলে, ‘ড্রামাটিক              বলা নাহি যায় ঠিক,
            লিরিকের বড়ো বাড়াবাড়ি।’

 

শির নাড়ি কেহ কহে,              ‘সব-সুদ্ধ মন্দ নহে,
            ভালো হ’ত আরো ভালো হলে।’
কেহ বলে, ‘আয়ুহীন            বাঁচিবে দু-চারি দিন,
            চিরদিন রবে না তা ব’লে।’
কেহ বলে ‘এ বহিটা             লাগিতে পারিত মিঠা
            হ’ত যদি অন্য কোনোরূপ।’
যার মনে যাহা লয়                সকলেই কথা কয়,
            আমি শুধু বসে আছি চুপ।

 

ল’য়ে নাম, ল’য়ে জাতি              বিদ্বানের মাতামাতি,
            ও-সকল আনিস নে কানে।
আইনের লৌহ-ছাঁচে              কবিতা কভু না বাঁচে,
            প্রাণ শুধু পায় তাহা প্রাণে।
হাসিমুখে স্নেহভরে              সঁপিলাম তোর করে,
            বুঝিয়া পড়িবি অনুরাগে।
কে বোঝে কে নাই বোঝে              ভাবুক তা নাহি খোঁজে,
            ভালো যার লাগে তার লাগে।

—রবিকাকা