রাজা ও রানী

   সুমিত্রা।                      করিনু শপথ।

কুমারসেন।  এ জীবন দিব বিসর্জন। তার পরে

তুমি মোর ছিন্নমুণ্ড নিয়ে, নিজ হস্তে

জালন্ধর-রাজ-করে দিবে উপহার।

বলিয়ো তাহারে— ‘কাশ্মীরে অতিথি তুমি ;

ব্যাকুল হয়েছ এত যে দ্রব্যের তরে

কাশ্মীরের যুবরাজ দিতেছেন তাহা

আতিথ্যের অর্ঘ্যরূপে তোমারে পাঠায়ে। '

মৌন কেন বোন? সঘনে কাঁপিছে কেন

চরণ তোমার? বোসো এই তরুতলে।

পারিবে না তুমি? একান্ত অসাধ্য এ কি?

তবে কি ভৃত্যের হস্তে পাঠাইতে হবে

তুচ্ছ উপহার-সম এ রাজমস্তক?

সমস্ত কাশ্মীর তারে ফেলিবে যে রোষে

ছিন্নভিন্ন করি।

সুমিত্রার মূর্ছা

            ছি ছি বোন! উঠ, উঠ!

পাষাণে হৃদয় বাঁধো। হয়ো না বিহ্বল।

দুঃসহ এ কাজ — তাই তো তোমার 'পরে

দিতেছি দুরূহ ভার। অয়ি প্রাণাধিকে,

মহৎ হৃদয় ছাড়া কাহারা সহিবে

জগতের মহাক্লেশ যত। বলো বোন,

পারিবে করিতে?

   সুমিত্রা।                  পারিব।

কুমারসেন।                           দাঁড়াও তবে।

ধরো বল, তোলো শির। উঠাও জাগায়ে

সমস্ত হৃদয়-মন। ক্ষুদ্রনারী-সম

আপন বেদনাভারে পড়ো না ভাঙিয়া।

   সুমিত্রা।  অভাগিনী ইলা!

কুমারসেন।                তারে কি জানি নে আমি?

হেন অপমান লয়ে সে কি মোরে কভু