ভগ্নহৃদয়
উচ্ছ্বসি বলিনু যত কাহিনী আমার!
কেন রে বলিলি হা রে, দুর্বল, অসার?
ভালোবাসিতেই যদি করিলি সাহস,
লুকাতে নারিস তাহা হা হৃদি অবশ?
পরের চোখের কাছে না ফেলিলে জল
আশ কি মেটে না তোর রে আঁখি দুর্বল?
মুরলা রে, অভাগী রে,   কেন ভালো বাসিলি রে?
যদি বা বাসিলি ভালো কেন তোর মন
হ’ল হেন নীচ হীন, দুর্বল এমন?
একটি মিনতি আজি রাখ গো আমার!
সহস্র যাতনা পাই   আর কখন তো, ভাই,
ফেলিব না তব কাছে অশ্রুবারিধার—
যেও না কবির কাছে ধরি তব পায়,
ভুলে যাও যত কথা কহেছি তোমায়!
দয়া করে আরেকটি কথা মোর রাখ,
যদি গো কবির ’পরে রোষ করে থাক
মোর কাছে কভু আর   কোরো নাক নাম তাঁর—
সে নাম ঘৃণার স্বরে কভু সহিব না!
জানালেম এই মোর প্রাণের প্রার্থনা!
অনিল।     তবে কি এমনি শুধু মিছে ভালোবেসে
শূন্য এ জীবন তোর ফুরাইবে শেষে!
মুরলা।      যায় যদি যাক্‌ ভাই, ফুরায় ফুরাক,
প্রভাতে তারার মতো মিশায় মিশাক—
মুরলার মতো ছায়া   কত আসে কত যায়,
            কি হয়েছে তায়!
অবোধ বালিকা আমি, মিছে কষ্ট পাই—
এ জীবনে মুরলার কোন কষ্ট নাই!
স্নেহের সমুদ্র সেই কবি গো আমার—
অনন্ত স্নেহের ছায়ে   আমারে রেখেছে পায়ে,
তাই যেন চিরকাল থাকে মুরলার!
সে স্নেহের কোলে শুয়ে কাটায় জীবন!
সে স্নেহের কোলে প্রাণ করে বিসর্জন!