অচলায়তন
অচলায়তনের গৃহ
গান

পঞ্চক।

তুমি       ডাক দিয়েছ কোন্‌ সকালে
কেউ তা জানে না,
আমার     মন যে কাঁদে আপন-মনে,
কেউ তা মানে না।
ফিরি আমি উদাস-প্রাণে,
তাকাই সবার মুখের পানে,
তোমার মতন এমন টানে
কেউ তো টানে না।
মহাপঞ্চকের প্রবেশ

মহাপঞ্চক। গান! আবার গান!

পঞ্চক। দাদা, তুমি তো দেখলে—তোমাদের এখানকার মন্ত্র-তন্ত্র আচার-আচমন সূত্র-বৃত্তি কিছুই পারলুম না।

মহাপঞ্চক। সে তো দেখতে বাকি নেই—কিন্তু সেটা কি খুব আনন্দ করবার বিষয়? তাই নিয়ে কি গলা ছেড়ে গান গাইতে হবে?

পঞ্চক। একমাত্র ঐটেই যে পারি।

মহাপঞ্চক। পারি! ভারি অহংকার। গান তো পাখিও গাইতে পারে। সেই যে বজ্রবিদারণ-মন্ত্রটা আজ সাত দিন ধরে তোমার মুখস্থ হল না, আজ তার কী করলে?

পঞ্চক। সাত দিন যেমন হয়েছে অষ্টম দিনেও অনেকটা সেইরকম। বরঞ্চ একটু খারাপ।

মহাপঞ্চক। খারাপ! তার মানে কী হল?

পঞ্চক। জিনিসটা যতই পুরোনো হচ্ছে মন ততই লাগছে না, ভুল ততই করছি—ভুল যতই বেশি বার করছি ততই সেইটেই পাকা হয়ে যাচ্ছে। তাই, গোড়ায় তোমরা যেটা বলে দিয়েছিলে আর আজ আমি যেটা আওড়াচ্ছি, দুটোর মধ্যে অনেকটা তফাত হয়ে গেছে। চেনা শক্ত।

মহাপঞ্চক। সেই তফাতটা ঘোচাতে হবে নির্বোধ।

পঞ্চক। সহজেই ঘোচে যদি তোমাদেরটাকেই আমার মতো করে নাও। নইলে আমি তো পারব না।

মহাপঞ্চক। পারবে না কী! পারতেই হবে।

পঞ্চক। তা হলে আর-একবার সেই গোড়া থেকে চেষ্টা করে দেখি—একবার মন্ত্রটা আউড়ে দিয়ে যাও।

মহাপঞ্চক। আচ্ছা বেশ, আমার সঙ্গে আবৃত্তি করে যাও। ওঁ তট তট তোতয় তোতয় স্ফট স্ফট স্ফোটয় স্ফোটয় ঘুণ ঘুণ ঘুণাপয় ঘুণাপয় স্বর বসত্ত্বানি। চুপ করে রইলে যে!