মায়ার খেলা

অশোক।     সে যদি না আসে এ জীবনে,

এ কাননে পথ না পায়!

সখীগণ।    যারা এসেছে তারা বসন্ত ফুরালে

নিরাশ প্রাণে ফেরে পাছে।

প্রমদা।     এ তো খেলা নয়, খেলা নয়।

এ যে হৃদয়দহনজ্বালা, সখী!

এ যে, প্রাণভরা ব্যাকুলতা,

গোপন মর্মের ব্যথা,

এ যে, কাহার চরণোদ্দেশে জীবন মরণ ঢালা।

কে যেন সতত মোরে

ডাকিয়ে আকুল করে,

যাই যাই করে প্রাণ, যেতে পারি নে।

যে কথা বলিতে চাহি

তা বুঝি বলিতে নাহি—

কোথায় নামায়ে রাখি, সখী, এ প্রেমের ডালা!

যতনে গাঁথিয়ে শেষে পরাতে পারি নে মালা।

প্রথমা সখী।    সে জন কে, সখী, বোঝা গেছে

আমাদের সখী যারে মনপ্রাণ সঁপেছে।

দ্বিতীয়া ও তৃতীয়া।   ও সে কে, কে, কে!

প্রথমা।     ওই যে তরুতলে, বিনোদমালা গলে,

না জানি কোন্‌ ছলে বসে রয়েছে।

দ্বিতীয়া।     সখী, কী হবে—

ও কি কাছে আসিবে কভু, কথা কবে?

তৃতীয়া।     ও কি প্রেম জানে, ও কি বাঁধন মানে?

ও কী মায়াগুণে মন লয়েছে!

দ্বিতীয়া।     বিভল আঁখি তুলে আঁখি-পানে চায়,

যেন পথ ভুলে এল কোথায়। ওগো

তৃতীয়া।     যেন কী গানের স্বরে, শ্রবণ আছে ভরে,

যেন কোন্‌ চাঁদের আলোয় মগ্ন হয়েছে।

অমর।     ওই মধুর মুখ জাগে মনে।

ভুলিব না এ জীবনে,

কী স্বপনে কী জাগরণে।