ফাল্গুনী

ফুলগুলোর মধ্যে কারা বলছে মনে রেখো, মনে রেখো, তাদের নাম তো মনে নেই কিন্তু মন যে উদাস হয়ে ওঠে।

একটা গান না গাইলে বুক ফেটে যাবে।

গান

তুই    ফেলে এসেছিস কারে। ( মন, মন রে আমার)

তাই    জনম গেল, শান্তি পেলি না রে। ( মন, মন রে আমার)

যে পথ দিয়ে চলে এলি

সে পথ এখন ভুলে গেলি,

কেমন করে ফিরবি তাহার দ্বারে। ( মন, মন রে আমার)

নদীর জলে থাকি রে কান পেতে,

কাঁপে যে প্রাণ পাতার মর্মরেতে।

মনে হয় রে পাব খুঁজি

ফুলের ভাষা যদি বুঝি,

যে-পথ গেছে সন্ধ্যাতারার পারে॥ ( মন, মন রে আমার)

এবার আমাদের বসন্ত-উৎসবে এ কী রকম সুর লাগছে।

এ যেন ঝরা পাতার সুর।

এতদিন বসন্ত তার চোখের জলটা আমাদের কাছে লুকিয়েছিল।

ভেবেছিল আমরা বুঝতে পারব না, আমরা যে যৌবনে দুরন্ত।

আমাদের কেবল হাসি দিয়ে ভুলোতে চেয়েছিল।

কিন্তু আজ আমরা আমাদের মনকে মজিয়ে নেব এই সমুদ্রপারের দীর্ঘনিশ্বাসে।

প্রিয়া, এই পৃথিবী আমাদের প্রিয়া। এই সুন্দরী পৃথিবী। সে চাচ্ছে আমাদের যা আছে সমস্তই — আমাদের হাতের স্পর্শ, আমাদের হৃদয়ের গান —

চাচ্ছে যা আমাদের আপনার মধ্যে আপনার কাছ থেকেও লুকিয়ে আছে।

ও যে কিছু পায় কিছু পায় না, এইজন্যেই ওর কান্না। পেতে পেতেই সব হারিয়ে যায়।

ওগো পৃথিবী, তোমাকে আমরা ফাঁকি দেব না।

গান

আমি       যাব না গো অমনি চলে।

মালা তোমার দেব গলে।

অনেক সুখে অনেক দুখে

তোমার বাণী নিলেম বুকে,

ফাগুনশেষে যাবার বেলা

আমার বাণী যাব বলে।