কাহিনী

কুন্তী।      এসেছি তোমারে নিতে।

কর্ণ।                     কোথা লবে মোরে!

কুন্তী।      তৃষিত বক্ষের মাঝে — লব মাতৃক্রোড়ে।

কর্ণ।       পঞ্চপুত্রে ধন্য তুমি, তুমি ভাগ্যবতী,

আমি কুলশীলহীন ক্ষুদ্র নরপতি —

মোরে কোথা দিবে স্থান।

কুন্তী।                     সর্ব-উচ্চভাগে

তোমারে বসাব মোর সর্বপুত্র-আগে

জ্যেষ্ঠ পুত্র তুমি।

কর্ণ।                কোন্‌ অধিকার-মদে

প্রবেশ করিব সেথা। সাম্রাজ্যসম্পদে

বঞ্চিত হয়েছে যারা মাতৃস্নেহধনে

তাহাদের পূর্ণ অংশ খণ্ডিব কেমনে

কহো মোরে। দ্যূতপণে না হয় বিক্রয়,

বাহুবলে নাহি হারে মাতার হৃদয় —

সে যে বিধাতার দান।

কুন্তী।                     পুত্র মোর, ওরে,

বিধাতার অধিকার লয়ে এই ক্রোড়ে

এসেছিলি একদিন — সেই অধিকারে

আয় ফিরে সগৌরবে, আয় নির্বিচারে—

সকল ভ্রাতার মাঝে মাতৃ-অঙ্কে মম

লহো আপনার স্থান।

কর্ণ।                     শুনি স্বপ্নসম,

হে দেবী, তোমার বাণী। হেরো, অন্ধকার

ব্যাপিয়াছে দিগ্‌বিদিকে, লুপ্ত চারি ধার —

শব্দহীনা ভাগীরথী। গেছ মোরে লয়ে

কোন্‌ মায়াচ্ছন্ন লোকে, বিস্মৃত আলয়ে,

চেতনাপ্রত্যুষে। পুরাতন সত্যসম

তব বাণী স্পর্শিতেছে মুগ্ধচিত্ত মম।

অস্ফুট শৈশবকাল যেন রে আমার,

যেন মোর জননীর গর্ভের আঁধার

আমারে ঘেরিছে আজি। রাজমাতঃ অয়ি,