শেষরক্ষা

বিনোদ।

গলে বুকের দুখের তাপে,

গলে চোখের জলে।

চন্দ্রকান্ত। বহুৎ আচ্ছা! আর-এক লাইন —

ও ভোলা মন, সেই সোনা তোর

কোন্‌ খনিতে পাই?

বিনোদ।

সেই বিধাতার খেয়ালে যার

ঠিক-ঠিকানা নাই।

চন্দ্রকান্ত। ক্যা বাৎ। আচ্ছা, আর-এক লাইন —

ও ভোলা মন, সোনার সে ধন

রাখবি কেমন করে?

বিনোদ।

রাখব তারে ধ্যানের মাঝে

মনের মধ্যে ভরে।

চন্দ্রকান্ত। বাস্‌, আর দরকার নেই, ফুল মার্ক পেয়েছ — পাস্‌ড্‌ উইথ্‌ অনার্স। আর ভয় নেই, সন্ধানে বেরিয়ে পড়া যাক —

সোনার স্বপন ধরুক-না রূপ

অপরূপের হাটে।

সোনার বাঁশি বাজাও, রসিক,

রসের নবীন নাটে।

বিনোদ। চন্দরদা, কে বলে তুমি কবি নও?

চন্দ্রকান্ত। ছায়ায় পড়ে গেছি ভাই, চন্দ্রগ্রহণ লেগেছে — তোমরা না থাকলে আমিও কবি বলে চলে যেতে পারতুম, কবিসম্রাট নাও যদি হতুম অন্তত কবি-তালুকদার হওয়া অসম্ভব ছিল না। দেখেছি, প্রাণের ভিতরটাতে মাঝে মাঝে রস উছলে ওঠে, কিন্তু তার ধারাটা মাসিকপত্র পর্যন্ত পৌঁছয় না।

বিনোদ। ঘরে আছে রসসমুদ্র, সেইখানেই লুপ্ত হয়ে যায়!

চন্দ্রকান্ত। এক্‌সেলেন্ট্‌। কবি না হলে এই গূঢ় খবর আন্দাজ করতে পারত কে বলো। ঐ যে আসছে আমাদের মেডিকাল স্টুডেন্ট।

গদাইয়ের প্রবেশ

 

চন্দ্রকান্ত। এই যে, গদাই! শরীরতত্ত্ব ছেড়ে হঠাৎ কবির দরবারে যে? তোমার বাবা জানলে যে শিউরে উঠবেন।