প্রেম
৩০২
     ওগো   এত প্রেম-আশা, প্রাণের তিয়াষা  কেমনে আছে সে পাশরি।
   তবে    সেথা কি হাসে না চাঁদিনী যামিনী,  সেথা কি বাজে না বাঁশরি॥
        সখী,   হেথা সমীরণ লুটে ফুলবন,  সেথা কি পবন বহে না।
        সে যে  তার কথা মোরে কহে অনুক্ষণ,  মোর কথা তারে কহে না!
     যদি     আমারে আজি সে ভুলিবে সজনী,  আমারে ভুলালে কেন সে।
     ওগো    এ চিরজীবন করিব রোদন,  এই ছিল তার মানসে !
        যবে   কুসুমশয়নে নয়নে নয়নে  কেটেছিল সুখরাতি রে,
        তবে   কে জানিত তার বিরহ আমার  হবে জীবনের সাথি রে।
     যদি    মনে নাহি রাখে, সুখে যদি থাকে,  তোরা একবার দেখে আয়–
     এই    নয়নের তৃষা, পরানের আশা,  চরণের তলে রেখে আয়।
       আর   নিয়ে যা রাধার বিরহের ভার,  কত আর ঢেকে রাখি বল্‌।
       আর   পারিস যদি তো আনিস হরিয়ে   এক-ফোঁটা তার আঁখিজল।
     না না,   এত প্রেম, সখী, ভুলিতে যে পারে   তারে আর কেহ সেধো না।
     আমি   কথা নাহি কব, দুখ লয়ে রব,   মনে মনে স’ব বেদনা।
       ওগো   মিছে মিছে, সখী, মিছে এই প্রেম,   মিছে পরানের বাসনা।
       ওগো   সুখদিন হায় যবে চলে যায়  আর ফিরে আর আসে না॥