কাহিনী

তব মুগ্ধ ব্যবহারে ; শিশুভুজপাশে

বন্দী হয়ে আছ পড়ি দেখে সবে হাসে

শত্রুদল দেশে দেশে, নীরব সংকোচে

বন্ধুগণ সংগোপনে অশ্রুজল মোছে। '

সোমক।     ব্রাহ্মণের সেই তীব্র তিরস্কার শুনি

অবাক হইল সভা। পাত্রমিত্র গুণী

রাজগণ প্রজাগণ রাজদূত সবে

আমার মুখের পানে চাহিল নীরবে

ভীত কৌতূহলে। রোষাবেশ ক্ষণতরে

উত্তপ্ত করিল রক্ত ; মুহূর্তেক-পরে

লজ্জা আসি করি দিল দ্রুত পদাঘাত

দৃপ্ত রোষসর্পশিরে। করি প্রণিপাত

গুরুপদে, কহিলাম বিনম্র বিনয়ে,

‘ ভগবন্‌, শান্তি নাই এক পুত্র লয়ে,

ভয়ে ভয়ে কাটে কাল। মোহবশে তাই

অপরাধী হইয়াছি — ক্ষমা ভিক্ষা চাই।

সাক্ষী থাকো মন্ত্রী-সবে, হে রাজন্যগণ,

রাজার কর্তব্য কভু করিয়া লঙ্ঘন

খর্ব করিব না আর ক্ষত্রিয়গৌরব। '

ঋত্বিক্‌।     কুণ্ঠিত আনন্দে সভা রহিল নীরব।

আমি শুধু কহিলাম বিদ্বেষের তাপ

অন্তরে পোষণ করি, এক-পুত্র-শাপ

দূর করিবারে চাও — পন্থা আছে তারো,

কিন্তু সে কঠিন কাজ, পারো কি না পারো

ভয় করি। ' শুনিয়া সগর্বে মহারাজ

কহিলেন, ‘ নাহি হেন সুকঠিন কাজ

পারি না করিতে যাহা ক্ষত্রিয়তনয়

কহিলাম স্পর্শি তব পাদপদ্মদ্বয়। '

শুনিয়া কহিনু মৃদু হাসি, ‘ হে রাজন্‌,

শুন তবে। আমি করি যজ্ঞ-আয়োজন

তুমি হোম করো দিয়ে আপন সন্তান।

তারি মেদগন্ধধূম করিয়া আঘ্রাণ