কাহিনী

এখনো জড়ায়ে আছে তোমার শরীর,

সদ্যছিন্ন পুষ্পে যথা বনের শিশির।

মাটির, তৃণের গন্ধ — ফুলের, পাতার,

শিশুর, নারীর হায়, বন্ধুর, ভ্রাতার

বহিয়া এনেছ তুমি। ছয়টি ঋতুর

বহুদিনরজনীর বিচিত্র মধুর

সুখের সৌরভরাশি।

সোমক।                      গুরুদেব, প্রভো,

এ নরকে কেন তব বাস?

 

ঋত্বিক্‌।                        পুত্রে তব

যজ্ঞে দিয়েছিনু বলি — সে পাপে এ গতি

মহারাজ!

প্রেতগণ।              কহ সে কাহিনী, নরপতি,

পৃথিবীর কথা। পাতকের ইতিহাস

এখনো হৃদয়ে হানে কৌতুক-উল্লাস।

রয়েছে তোমার কণ্ঠে মর্তরাগিণীর

সকল মূর্ছনা, সুখদুঃখকাহিনীর

করুণ কম্পন। কহ তব বিবরণ

মানবভাষায়।

সোমক।               হে ছায়াশরীরীগণ,

সোমক আমার নাম, বিদেহভূপতি।

বহু বর্ষ আরাধিয়া দেবদ্বিজযতি,

বহু যাগযজ্ঞ করি, প্রাচীন বয়সে

এক পুত্র লভেছিনু — তারি স্নেহবশে

রাত্রিদিন আছিলাম আপনা-বিস্মৃত।

সমস্ত-সংসারসিন্ধু-মথিত অমৃত

ছিল সে আমার শিশু। মোর বৃন্ত ভরি

একটি সে শ্বেতপদ্ম, সম্পূর্ণ আবরি

ছিল সে জীবন মোর। আমার হৃদয়

ছিল তারি মুখ- ' পরে সূর্য যথা রয়

ধরণীর পানে চেয়ে। হিমবিন্দুটিরে