ভাব ও অভাব

বশম্বদ। ( গুরুতর কাশি ) খক্ খক্ খক্ খক্!

কুঞ্জবিহারী। মাঝখানে চাঁদ যেন-

বশম্বদ। খন্‌ খন্‌ খক্‌ খক্‌!

কুঞ্জবিহারী। ( ঠেলা দিয়া ) শুনছেন বশম্বদবাবু — মাঝখানে চাঁদ যেন-

বশম্বদ। রসুন একটু — খক্‌ খক্‌ খন্‌ খন্‌ ঘড়্‌ ঘড়্‌!

কুঞ্জবিহারী। ( চটিয়া উঠিয়া ) আপনি অত্যন্ত বদলোক। এরকম করে যদি কাশতে হয় তো আপনি ঘরের কোণে গিয়ে কম্বল মুড়ি দিয়ে পড়ে থাকুন। এমন বাগান-

বশম্বদ। ( সভয়ে প্রাণপণে কাশি চাপিয়া ) আজ্ঞে, আমার আর কিছু নেই। ( স্বগত ) অর্থাৎ কম্বলও নেই, কাঁথাও নেই।

কুঞ্জবিহারী। এই শোভা দেখে আমার একটি গান মনে পড়ছে। আমি গাই —

সু-উ-উন্দর উপবন বিকশিত তরু-উগণ মনোহর বকু-

বশম্বদ। ( উৎ কট হাঁচি) হ্যাঁচ্ছোঃ!

কুঞ্জবিহারী। মনোহর বকু-

বশম্বদ। হ্যাঁচ্ছোঃ — হ্যাঁচ্ছোঃ-

কুঞ্জবিহারী। শুনছেন? মনোহর বকু-

বশম্বদ। হ্যাঁচ্ছোঃ হ্যাঁচ্ছোঃ!

কুঞ্জবিহারী। বেরোও আমার বাগান থেকে-

বশম্বদ। রসুন — হ্যাঁচ্ছোঃ!

কুঞ্জবিহারী। বেরোও এখেন থেকে-

বশম্বদ। এখনি বেরোচ্ছি — আমার আর এক দণ্ডও এ বাগানে থাকবার ইচ্ছে নেই — আমি না বেরোলে আমার মহাপ্রাণী বেরোবেন। হ্যাঁচ্ছোঃ! শরৎকালের মাধুরী আমার নাক-চোখ দিয়ে বেরোচ্ছে। প্রাণটা সুদ্ধ হেঁচে ফেলবার উপক্রম। হ্যাঁচ্ছোঃ হ্যাঁচ্ছোঃ। খক্‌ খক্‌! কিন্তু কুঞ্জবাবু, সেই কাজটা যদি — হ্যাঁচ্ছোঃ!

কুঞ্জবাবুর শাল মুড়ি দিয়া নীরবে আকাশের চাঁদের দিকে চাহিয়া থাকন।

ভৃত্যের প্রবেশ

ভৃত্য। খাবার এসেছে।

কুঞ্জবিহারী। দেরি করলি কেন? খাবার আনতে দু-ঘন্টা লাগে বুঝি?

[ দ্রুত প্রস্থান