নটরাজ

শরৎ বাণীর বীণা বাজে

কমলদলে।

ললিত রাগের সুর ঝরে তাই

শিউলিতলে।

তাই তো বাতাস বেড়ায় মেতে

কচি ধানের সবুজ খেতে,

বনের প্রাণে মরমরানির

ঢেউ উঠালে।


শরতের বিদায়

কেন গো যাবার বেলা

গোপনে চরণ ফেলা,

যাওয়ার ছায়াটি পড়ে যে হৃদয়-মাঝে,

অজানা ব্যথার তপ্ত আভাস রক্ত আকাশে বাজে।

সুদূর বিরহতাপে

বাতাসে কী যেন কাঁপে,

পাখির কণ্ঠ করুণ ক্লান্তি-ভরা,

হারাই হারাই মনে করে তাই সংশয়-ম্লান ধরা।

জানিনে গহন বনে

শিউলি কী ধ্বনি শোনে,

আনমনে তার ভূষণ খসায়ে ফেলে।

মালতী আপন সব ঢেলে দেয়, শেষ খেলা তার খেলে।

না হতে প্রহর শেষ

হবে কি নিরুদ্দেশ,

তোমার নয়নে এখনো রয়েছে হাসি,

বাজায়ে সোহিনী এখনো মোহিনী বাঁশি ওঠে উচ্ছ্বাসি।

এই তব আসা-যাওয়া

একি খেয়ালের হাওয়া,

মিলনপুলক তাতেও কি অবহেলা,

আজি এ বিরহ-ব্যথার বিষাদ এও কেবলি খেলা?