জাতীয় সঙ্গীত
               ভারত রে, তোর কলঙ্কিত পরমাণুরাশি
         যত দিন সিন্ধু না ফেলিবে গ্রাসি  তত দিন তুই কাঁদ্‌ রে।
         এই হিমগিরি স্পর্শিয়া আকাশ  প্রাচীন হিন্দুর কীর্তি-ইতিহাস
         যত দিন তোর শিয়রে দাঁড়ায়ে  অশ্রুজলে তোর বক্ষ ভাসাইবে
                     তত দিন তুই কাঁদ্‌ রে॥

         যে দিন তোমার গিয়াছে চলিয়া  সে দিন তো আর আসিবে না।
         যে রবি পশ্চিমে পড়েছে ঢলিয়া  সে আর পুরবে উঠিবে না।
         এমনি সকল নীচ হীনপ্রাণ  জনমেছে তোর কলঙ্কী সন্তান
         একটি বিন্দু অশ্রুও কেহ  তোমার তরে দেয় না ঢালি।
      যে দিন  তোমার তরে শোণিত ঢালিত  সে দিন যখন গিয়াছে চলি
                     তখন, ভারত, কাঁদ্‌ রে॥

         তবে কেন বিধি এত অলঙ্কারে  রেখেছ সাজায়ে ভারতকায়।
         ভারতের বনে পাখি গায় গান,  স্বর্ণমেঘ-মাখা ভারতবিমান—
         হেথাকার লতা ফুলে ফুলে ভরা,  স্বর্ণশস্যময়ী হেথাকার ধরা—
                     প্রফুল্ল তটিনী বহিয়ে যায়।
         কেন লজ্জাহীনা অলঙ্কার পরি    রোগশুষ্কমুখে হাসিরাশি ভরি
                     রূপের গরব করিস্‌ হায়।
                 যে দিন গিয়াছে সে তো ফিরিবে না,
                     তবে, রে ভারত, কাঁদ্‌ রে॥

         ভারত, তোর এ কলঙ্ক দেখিয়া  শরমে মলিন মুখ লুকাইয়া
         আমরা যে কবি বিজনে কাঁদিব,  বিজনে বিষাদে বীণা ঝঙ্কারিব,
                     তাতেও যখন স্বাধীনতা নাই
                            তখন, ভারত, কাঁদ্‌ রে॥