প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
ইন্দ্রকুমার। সে বলবার কথা না খাঁ সাহেব; সে আমাকে কিছু জিজ্ঞাসা কোরো না, সেবার আমি হেরেছিলুম।
ইশা খাঁ। তীর ছুঁড়ে হারো নি বাবা, রাগ করে হেরেছিলে।
আরাকান। দেখুন রাজকুমার, আমাকে বন্দী করে আপনাদের কোনো লাভ নেই।
রাজধর। কেন লাভ নেই রাজন? এই যুদ্ধের মধ্যে আপনাকে লাভ করাই তো সব চেয়ে বড়ো লাভ।
আরাকান। তাতে যুদ্ধের অবসান হবে না। আমার ভাই হাম্চু রয়েছে, সৈন্যেরা তাকেই রাজা করবে, যুদ্ধ যেমন চলছিল তেমনি চলবে।
রাজধর। আপনাকে মুক্তিই দেব, কিন্তু সেটা তো একেবারে বিনা মূল্যে দেওয়া চলবে না।
আরাকান। সে আমি জানি, মূল্য দিতে হবে। আমি আপনার কাছে পরাজয় স্বীকার করে সন্ধিপত্র লিখে দিতে রাজি আছি।
রাজধর। শুধু সন্ধিপত্র দিলে তো হবে না মহারাজ। আপনি যে পরাজয় স্বীকার করলেন তার কিছু নিদর্শন তো দেশে নিয়ে যেতে হবে।
আরাকান। আপনাকে পাঁচ শত ব্রক্ষ্মদেশের ঘোড়া ও তিনটি হাতি উপহার দেব।
রাজধর। সে উপহারে আমার প্রয়োজন নেই; মহারাজের মাথার মুকুট আমাকে দিতে হবে।
আরাকান। তার চেয়ে প্রাণ দেওয়া সহজ ছিল।
রাজধর। প্রাণ দিলেও মুকুটটি তো বাঁচাতে পারবেন না, মাঝের থেকে প্রাণটাই বৃথা যাবে।
আরাকান। তবে মুকুট নিন, কিন্তু এই মুকুটের সহিত আরাকানের চিরস্থায়ী শত্রুতা আপনি ঘরে নিয়ে যাচ্ছেন। এই মুকুট যতদিন না আবার ফিরে পাব ততদিন আমার রাজবংশে শান্তি থাকবে না।
রাজধর। এই তো রাজার মতো কথা। আমরাও তো শান্তি চাই নে মহারাজ, আমরা ক্ষত্রিয়। আর-একটি কর্তব্য বাকি আছে। শীঘ্র যুদ্ধ নিবারণ করে এক আদেশপত্র আপনার সেনাপতির নিকট পাঠিয়ে দিন, ও পারে এতক্ষণ যুদ্ধের উদ্যোগ হচ্ছে।
আরাকান। এখনই আমার আদেশ নিয়ে দূত যাবে।
রাজধর। তবে চলুন, সন্ধিপত্র লেখার ব্যাবস্থা করা যাক।