চিত্রাঙ্গদা
প্রথম আস্বাদটুকু দিয়ে, মুখ হতে
সুধাপাত্র কেড়ে নিয়ে চূর্ণ কর যদি
ভূমিতলে, অকস্মাৎ সে আঘাতভরে
চমকিয়া, কী আক্রোশে হেরিবে তোমায়।
চিত্রাঙ্গদা। সেও ভালো। এই ছদ্মরূপিণীর চেয়ে
শ্রেষ্ঠ আমি শতগুণে। সেই আপনারে
করিব প্রকাশ; ভালো যদি নাই লাগে,
ঘৃণাভরে চলে যান যদি, বুক ফেটে
মরি যদি আমি, তবু আমি— আমি রব।
সেও ভালো, ইন্দ্রসখা।
বসন্ত। শোনো মোর কথা।
ফুলের ফুরায় যবে ফুটিবার কাজ
তখন প্রকাশ পায় ফল। যথাকালে
আপনি ঝরিয়া প’ড়ে যাবে, তাপক্লিষ্ট
লঘু লাবণ্যের দল; আপন গৌরবে
তখন বাহির হবে; হেরিয়া তোমারে
নূতন সৌভাগ্য বলি মানিবে ফাল্গুনী।
যাও ফিরে যাও, বৎসে, যৌবন-উৎসবে।
৪
অর্জুন ও চিত্রাঙ্গদা
চিত্রাঙ্গদা। কী দেখিছ বীর।
অর্জুন। দেখিতেছি পুষ্পবৃন্ত
ধরি, কোমল অঙ্গুলিগুলি রচিতেছে
মালা; নিপুণতা চারুতায় দুই বোনে
মিলি, খেলা করিতেছে যেন সারাবেলা
চঞ্চল উল্লাসে, অঙ্গুলির আগে আগে।
দেখিতেছি আর ভাবিতেছি।
চিত্রাঙ্গদা। কী ভাবিছ।
অর্জুন। ভাবিতেছি অমনি সুন্দর ক’রে ধ’রে,
সরসিয়া ওই রাঙা পরশের রসে,