মালঞ্চ

সরলা। জানি নে যে ভাই, প্রতিজ্ঞাপালনে কী বিঘ্ন একদিন ঘটতে পারে।

আদিত্য। বিঘ্ন তোমার অন্তরে আছে কি? সেই কথাটা বলো আগে।

সরলা। কেন আমাকে দুঃখ দাও? তুমি কি জান না এমন কথা আছে ভাষায় বললে যার আলো যায় নিভে।

আদিত্য। আচ্ছা, এই শুনলুম, এই শুনেই চললুম কাজে।

সরলা। আর ফিরে তাকাবে না?

আদিত্য। না, কিন্তু..একটা কথা জিজ্ঞাসা করি, এখন কী করবে, থাকবে কোথায়?

সরলা। সে ভার নিয়েছেন রমেনদা।

আদিত্য। রমেন তোমাকে আশ্রয় দেবে? সে লক্ষ্মীছাড়ার চালচুলো আছে কি?

সরলা। ভয় নেই তোমার, পাকা আশ্রয়। নিজের সম্পত্তি নয়,কিন্তু বাধা ঘটবে না।

আদিত্য। আমি জানতে পারব তো?

সরলা। নিশ্চয় জানতে পারবে কথা দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু ইতিমধ্যে আমাদের দেখবার জন্যে একটুও ব্যস্ত হতে পারবে না এই সত্য করো।

আদিত্য। তোমারো মন ব্যস্ত হবে না?

সরলা। যদি হয় অন্তর্যামী ছাড়া আর কেউ জানতে পারবে না।

তৃতীয় অঙ্ক
প্রথম দৃশ্য
নীরজার ঘর
নীরজা ও রোশনি

নীরজা। রোশনি।

রোশনি। কী খোঁখী।

নীরজা। কাল থেকে সরলাকে দেখছি নে কেন?

রোশনি। সে কী কথা, জান না, সরকার বাহাদুর যে তাকে পুলিপোলাও চালান দিয়েছে?

নীরজা। কেন, কী করেছিল?

রোশনি। দারোয়ানের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে বড়োলাটের মেমসাহেবের ঘরে ঢুকেছিল।

নীরজা। কি করতে?

রোশনি। মহারানীর সীলমোহর থাকে যে-বাক্সোয় সেইটে চুরি করতে, আচ্ছা বুকের পাটা!

নীরজা। লাভ কী?

রোশনি। ঐ শোনো, সেটা পেলেই তা সব হল। লাটসাহেবের ফাঁসি দিতে পারত। সেই মোহরের ছাপেই তো রাজ্যিখানা চলছে।

নীরজা। আর ঠাকুরপো?