জয়পরাজয়

নূপুর বাজিল। দক্ষিণের বাতাসের সঙ্গে কেশগুচ্ছের একটা সুগন্ধ ঘরে প্রবেশ করিল।

কবি নিমীলিতনেত্রে কহিলেন, “ দেবী, ভক্তের প্রতি দয়া করিলে কি। এতদিন পরে আজ কি দেখা দিতে আসিলে। ”

একটি সুমধুর কণ্ঠে উত্তর শুনিলেন, “ কবি, আসিয়াছি। ”

শেখর চমকিয়া উঠিয়া চক্ষু মেলিলেন- দেখিলেন, শয্যার সম্মুখে এক অপরূপ রমণীমূর্তি।

মৃত্যুসমাচ্ছন্ন বাষ্পাকুলনেত্রে স্পষ্ট করিয়া দেখিতে পাইলেন না। মনে হইল, তাঁহার হৃদয়ের সেই ছায়াময়ী প্রতিমা অন্তর হইতে বাহির হইয়া মৃত্যুকালে তাঁহার মুখের দিকে স্থিরনেত্রে চাহিয়া আছে।

রমণী কহিলেন, “ আমি রাজকন্যা অপরাজিতা। ”

কবি প্রাণপণে উঠিয়া বসিলেন।

রাজকন্যা কহিলেন, “ রাজা তোমার সুবিচার করেন নাই। তোমারই জয় হইয়াছে, কবি, তাই আমি আজ তোমাকে জয়মাল্য দিতে আসিয়াছি। ”

বলিয়া অপরাজিতা নিজের কণ্ঠ হইতে স্বহস্তরচিত পুষ্পমালা খুলিয়া কবির গলায় পরাইয়া দিলেন। মরণাহত কবি শয্যার উপরে পড়িয়া গেলেন।