ঋণশোধ
তাকে পরদেশী সাজতে হয়। এই আমাদের ঠাকুরদা বুড়ো হয়ে বসে আছেন ওটাও ওঁর সাজমাত্র—উনি যে বালক সেটা উনি বার্ধক্যের ভিতর দিয়ে খুব ভালো করে চিনে নিচ্ছেন।

ঠাকুরদাদা। ভাই, এ খবর তুমি পেলে কোথা থেকে?

শেখর। সাজের ভিতর থেকে মানুষকে খুঁজে বের করা, সেই তো আমার কাজ। ঠাকুরদা, আমি আগে থাকতে তোমাকে বলে রাখছি এই যে মানুষটিকে দেখছ, উনি বড়ো যে-সে লোক নন—একদিন হয়তো চিনতে পারবে।

ঠাকুরদাদা। সে আমি কিছু কিছু চিনেছি –নিজের বুদ্ধির গুণে নয় ওঁরই দীপ্তির গুণে।

সন্ন্যাসী। আর এই পরদেশীকে কী রকম ঠেকছে ঠাকুরদা।

ঠাকুরদাদা। সে আর কী বলব, যেন একেবারে চিরদিনের চেনা।

সন্ন্যাসী। ঠিক বলেছ, আমার পক্ষেও তাই। কিন্তু আবার ক্ষণে ক্ষণে মনে হয় যেন ওঁকে চেনবার জো নেই। উনি যে কিসের খোঁজে কখন কোথায় ফেরেন তা বোঝা শক্ত।

গান

শেখর।

আমি তারেই খুঁজে বেড়াই যে রয় মনে, আমার মনে।
            ও সে আছে বলে
আকাশ জুড়ে ফোটে তারা রাতে, প্রাতে ফুল ফুটে রয় বনে।
            সে আছে বলে চোখের তারার আলোয়
এত রূপের খেলা রঙের মেলা অসীম সাদায় কালোয়,
            ও সে সঙ্গে থাকে বলে
আমার অঙ্গে অঙ্গে পুলক লাগায় দখিন সমীরণে।
            তারি বাণী হঠাৎ উঠে পুরে
আন্‌মনা কোন্‌ তানের মাঝে আমার গানের সুরে।
            দুখের দোলে হঠাৎ মোরে দোলায়
                 কাজের মাঝে লুকিয়ে থেকে
                    আমারে কাজ ভোলায়।
            সে মোর চিরদিনের বলে
তারি পুলকে মোর পলকগুলি ভরে ক্ষণে ক্ষণে।


প্রথম বালক। কিন্তু আর লিখতে ভালো লাগছে না।

দ্বিতীয় বালক। না, আর নয়।