নবীন

পথিক চলে গেল সুদূরের বাণীকে জাগিয়ে দিয়ে। এমনি করে কাছের বন্ধনকে বারে বারে সে আলগা করে দেয়। একটা কোন্‌ অপরিচিত ঠিকানার উদ্দেশ বুকের ভিতর রেখে দিয়ে যায় — জানলায় বসে দেখতে পাই, তার পথ মিলিয়ে গেছে বনরাজিনীলা দিগন্তরেখার ওপারে। বিচ্ছেদের ডাক শুনতে পাই কোন্‌ নীলিম কুহেলিকার প্রান্ত থেকে — উদাস হয়ে যায় মন — কিন্তু সেই বিচ্ছেদের বাঁশিতে মিলনেরই সুর তো বাজে করুণ সাহানায়।

বাজে করুণ সুরে, হায় দূরে

এই খেলা-ভাঙার খেলা বীরের খেলা। শেষ পর্যন্ত যে ভঙ্গ দিল না তারই জয়। বাঁধন ছিঁড়ে যে চলে যেতে পারল, পথিকের সঙ্গে বেরিয়ে পড়ল পথে, তারই জন্যে জয়ের মালা। পিছনে ফিরে ভাঙা খেলনার টুকরো কুড়োতে গেল যে কৃপণ তার খেলা পুরা হল না — খেলা তাকে মুক্তি দিল না, খেলা তাকে বেঁধে রাখলে। এবার তবে ধুলোর সঞ্চয় চুকিয়ে দিয়ে হালকা হয়ে বেরিয়ে পড়ো।

বসন্তে ফুল গাঁথল আমার জয়ের মালা

এবার প্রলয়ের মধ্যে পূর্ণ হোক লীলা, শমে এসে সব তান মিলুক, শান্তি হোক, মুক্তি হোক্‌।

ওরে পথিক, ওরে প্রেমিক

 

১ দ্রষ্টব্যঃ বসন্ত। রবীন্দ্র-রচনাবলী ১৫শ (সুলভ অষ্টম) খন্ড

২ তুলনীয়ঃ হৃদয় আমার, ওই বুঝি তোর বৈশাখী ঝড় আসে। নটরাজ। রবীন্দ্র-রচনাবলী ১৮শ (সুলভ নবম) খন্ড

৩ দ্রষ্টব্যঃ ফাল্গুনী। রবীন্দ্র-রচনাবলী ১২শ (সুলভ ষষ্ঠ) খন্ড