শেষের কবিতা
নিবারণ চক্রবর্তীর হওয়াই চাই। আর-কারোও নয়।”

অমিত উৎফুল্ল হয়ে বললে, “জয় নিবারণ চক্রবর্তীর!। এতদিনে সে হল অমর। বন্যা, তাকে আমি তোমার সভাকবি করে দেব। তুমি ছাড়া আর-কারো দ্বারে সে প্রসাদ নেবে না।”

“তাতে কি সে বরাবর সন্তুষ্ট থাকবে।”

“না থাকে তো তাকে কান মলে বিদায় করে দেব।”

“আচ্ছা, কান-মলার কথা পরে স্থির করব; এখন শুনিয়ে দাও।”

অমিত আবৃত্তি করতে লাগল—

        “কত ধৈর্য ধরি
ছিলে কাছে দিবসশর্বরী।
             তব পদ-অঙ্কনগুলিরে
কতবার দিয়ে গেছ মোর ভাগ্যপথের ধূলিরে।
        আজ যবে
দূরে যেতে হবে
       তোমারে করিয়া যাব দান
           তব জয়গান।
কতবার ব্যর্থ আয়োজনে
          এ জীবনে
হোমাগ্নি উঠে নি জ্বলি,
          শূন্যে গেছে চলি
হতাশ্বাস ধূমের কুণ্ডলী।
কতবার ক্ষণিকের শিখা
         আঁকিয়াছে ক্ষীণ টিকা
নিশ্চেতন নিশীথের ভালে।
লুপ্ত হয়ে গেছে তাহা চিহ্নহীন কালে।
       এবার তোমার আগমন
         হোমহুতাশন
         জ্বেলেছে গৌরবে।
       যজ্ঞ মোর ধন্য হবে।
আমার আহুতি দিনশেষে
করিলাম সমর্পণ তোমার উদ্দেশে।
          লহো এ প্রণাম
        জীবনের পূর্ণপরিণাম।