ঋণশোধ

মন্ত্রী। মহারাজ, কী এমন বিশেষ কর্তব্য আছে যে –

বিজয়াদিত্য। আছে কর্তব্য। আমি সেই বীনকারকে ডাকতে যাব।

মন্ত্রী। বীনকার? সেই সুরসেন? আমি এখনই লোক পাঠিয়ে দিচ্ছি।

বিজয়াদিত্য। না না, রাজার ডাকে বীণার ঠিক সুরটি বাজে না। আমি তার দরজার বাইরে মাটিতে বসে শুনব, তারপরে যদি ডাক পড়ে তবে ঘরের ভিতরে গিয়ে বসে শুনব।

মন্ত্রী। মহারাজ, এ কী কথা বলছেন?

বিজয়াদিত্য। সিংহাসনে সুর পৌঁছোয় না। শ্রোতার আসন থেকে আমাকে চিরদিন বঞ্চিত করতে পারবে না। আমি মাটিতে বসব মেঠো ফুলের সঙ্গে এক পঙ্‌‌ক্তিতে। কবিকে ডেকে দাও তো মন্ত্রী।

মন্ত্রী। দিচ্ছি এখনই দিচ্ছি।

[মন্ত্রীর প্রস্থান
শেখরের প্রবেশ

বিজয়াদিত্য। কবি, আমার বেরোবার সময় হল। যাবার আগে সেই মেঠো ফুলের গানটা শুনিয়ে দাও।

শেখর।

গান
যখন   সারা নিশি ছিলেম শুয়ে
          বিজন ভুঁয়ে
    মেঠো ফুলের পাশাপাশি;
    তখন  শুনেছিলেম তারার বাঁশি।
যখন  সকাল বেলা খুঁজে দেখি     স্বপ্নে শোনা সে সুর এ কি
আমার   মেঠো ফুলের চোখের জলে উঠে ভাসি।
        এ সুর আমি খুঁজেছিলেম রাজার ঘরে
        শেষে ধরা দিল ধরার ধূলির ’পরে।
এ যে   ঘাসের কোলে আলোর ভাষা
        আকাশ থেকে ভেসে-আসা,
এ যে   মাটির কোলে মানিক-খসা হাসিরাশি।


মন্ত্রীর প্রবেশ

মন্ত্রী। মহারাজ, বেতসিনীতীরে পিঞ্জরীতে বীনকার সুরসেনের বাস। যখন আপনি সেখানে যাওয়াই স্থির
করেছেন তখন সেইসঙ্গে একটা রাজকার্যও সম্পন্ন করতে পারেন।

বিজয়াদিত্য। সেখানে রাজকার্য আছে না কি?