রাজা
গান

বসন্তে কি শুধু কেবল ফোটা ফুলের মেলা রে।

দেখিস নে কি শুকনো পাতা ঝরা ফুলের খেলা রে।

যে ঢেউ ওঠে তারি সুরে

বাজে কি গান সাগর জুড়ে।

যে ঢেউ পড়ে তাহারো সুর জাগছে সারা বেলা রে।

বসন্তে আজ দেখ্‌ রে তোরা ঝরা ফুলের খেলা রে।

আমার প্রভুর পায়ের তলে

শুধুই কি রে মানিক জ্বলে।

চরণে তাঁর লুটিয়ে কাঁদে লক্ষ মাটির ঢেলা রে।

আমার গুরুর আসন-কাছে

সুবোধ ছেলে ক’জন আছে।

অবোধ জনে কোল দিয়েছেন, তাই আমি তাঁর চেলা রে।

উৎসবরাজ দেখেন চেয়ে ঝরা ফুলের খেলা রে॥


প্রাসাদশিখর
সুদর্শনা ও সখী রোহিণী

সুদর্শনা। ওলো রোহিণী, তুই আমার রাজাকে কি কখনো দেখিস নি।

রোহিণী। শুনেছি প্রজারা সবাই দেখেছে, কিন্তু চিনেছে খুব অল্প লোকে। সেইজন্যে যখনই কাউকে দেখে মনটা চমকে ওঠে তখনই মনে করি, এই বুঝি হবে রাজা। আবার দুদিন পরে ভুল ভাঙে।

সুদর্শনা। ভুল তোরা করতে পারিস, কিন্তু আমার ভুল হতে পারে না। আমি হলুম রাণী। ঐ তো আমার রাজাই বটে।

রোহিণী। তোমাকে তিনি কত মান দিয়েছেন; তিনি কি তোমাকে চেনাতে দেরি করতে পারেন।

সুদর্শনা। ঐ মূর্তি দেখলেই চিত্ত যে আপনি খাঁচার পাখির মতো চঞ্চল হয়ে ওঠে। ওর কথা ভালো করে জিজ্ঞাসা করে এসেছিস তো?

রোহিণী। এসেছি বৈকি। যাকে জিজ্ঞাসা করি সেই তো বলে— রাজা।

সুদর্শনা। কোথাকার রাজা।

রোহিণী। আমাদেরই রাজা।

সুদর্শনা। ঐ যার মাথায় ফুলের ছাতা ধরে আছে তার কথাই তো বলছিস?