ইঁদুরের ভোজ
তোমাদের কষ্ট দেব না, অন্য কামরায় জায়গা হবে।

না না, সে হবে না, আমাদের গাড়িতেই উঠতে হবে। আপনার পুঁটুলিতে যদি কিছু বাকি থাকে আমরা সবাই মিলে পাহারা দেব, কিছুই নষ্ট হবে না।

ভদ্রলোক বললেন, আচ্ছা বাবা, তোমরা গাড়িতে ওঠো, আমি আসছি।

ছেলেরা তো উঠল গাড়িতে। একটু বাদেই মিঠাইওয়ালার ঠেলাগাড়ি ওদের কামরার সামনে এসে দাঁড়ালো, সেইসঙ্গে ভদ্রলোক।

এক-এক ঠোঙা এক-একজনের হাতে দিয়ে বললেন, এবারে ইঁদুরের ভোজে অনটন হবে না।

ছেলেগুলো হুর্‌রে ব’লে লাফালাফি করতে লাগল। আমের ঝুড়ি নিয়ে আমওয়ালা এল — ভোজে আমও বাদ গেল না।

ছেলেরা তাঁকে বললে,আপনি কী করতে কোথায় যাচ্ছেন বলুন।

তিনি বললেন, আমি কাজ খুঁজতে চলেছি, যেখানে কাজ পাব সেখানেই নেবে পড়ব।

ওরা জিজ্ঞাসা করলে, কী কাজ আপনি করেন?

তিনি বললেন, আমি টুলো পণ্ডিত, সংস্কৃত পড়াই।

ওরা সবাই হাততালি দিয়ে উঠল; বললে, তা হলে আমাদের ইস্কুলে আসুন।

তোমাদের কর্তারা আমাকে রাখবেন কেন?

রাখতেই হবে। কালো কুমড়ো টাটকা লঙ্কাকে আমরা পাড়ায় ঢুকতেই দেব না।

মুশকিলে ফেললে দেখছি! যদি সেক্রেটারিবাবু আমাকে পছন্দ না করেন?

পছন্দ করতেই হবে— না করলে আমরা সবাই ইস্কুল ছেড়ে চলে যাব।

আচ্ছা বাবা, তোমরা আমাকে তবে নিয়ে চলো।

গাড়ি এসে পৌঁছল স্টেশনে। সেখানে স্বয়ং সেক্রেটারিবাবু উপস্থিত। বৃদ্ধ লোকটিকে দেখে বললেন, আসুন, আসুন তর্কালঙ্কার মশায়! আপনার বাসা প্রস্তুত আছে।

ব’লে পায়ের ধুলো নিয়ে প্রণাম করলেন।