শৈশবসঙ্গীত
    নিশা হ’ল সুগভীর।
বিজয়ের সেনা পলাইল রণে—
    জয়ী হ’ল রণধীর।
কারাগারমাঝে পশি রণধীর
    কহিল অধীর স্বরে,
“লীলা!— রণধীর এসেছে তোমার
    এস এ বুকের ‘পরে!”
ভূমিতল হ’তে চাহি দেখে লীলা
    সহসা চমকি উঠি,
হরষ-আলোকে জ্বলিতে লাগিল
    লীলার নয়ন দুটি।
“এস, নাথ, এস অভাগীর পাশে
    বস একবার হেথা!
জনমের মত দেখি ও মুখানি
    শুনি ও মধুর কথা!
ডাক’, নাথ, সেই আদরের নামে
    ডাক’মোরে স্নেহভরে—
এ অবশ মাথা তুলে লও, সখা,
    তোমার বুকের ‘পরে!”
লীলার হৃদয়ে ছুরিকা বিঁধানো,
    বহিছে শোণিতধারা—
রহে রণধীর পলকবিহীন
    যেন পাগলের পারা।
রণধীর বুকে মুখ লুকাইয়া
    গলে বাঁধি বাহুপাশ,
কাঁদিয়া কাঁদিয়া কহিল বালিকা,
    “পূরিল না কোন আশ!
মরিবার সাধ ছিল না আমার,
    কত ছিল সুখ-আশা!
পারিনু না, সখা, করিবারে ভোগ
    তোমার ও ভালবাসা!