ঔপনিষদ ব্রহ্ম
হয় তবে তাহাকে অমৃত বলিয়া গ্রহণ কর। অক্ষয় আশায়, অক্ষুণ্ন বলে, অনন্ত প্রাণের আশ্বাসে, ব্রহ্মসেবার পরম গৌরবে সংসারের সঙ্কট-পথে সরলহৃদয়ে ঋজুদেহে চলিয়া যাও। সুখের সময় বলো, অস্তি—তিনি আছেন! দুঃখের সময় বলো, অস্তি—তিনি আছেন! বিপদের সময় বলো, অস্তি—তিনি আছেন! পরমাত্মার মধ্যে আত্মার অবাধ স্বাধীনতা, অপরিসীম আনন্দ, অপরাজিত অভয়লাভ করিয়া সমস্ত অপমান দৈন্য গ্লানি নিঃশেষে প্রক্ষালিত করিয়া ফেলো! বলো, যে মহান্‌ অজ আত্মা হইতে বাক্য মন নিবৃত্ত হইয়া আসে আমি সেইখান হইতে আনন্দলাভ করিয়াছি, আমি কদাচ ভয় করি না, আমি কাহা হইতেও ভয় পাই না—আমার ন জরাঃ ন মৃত্যুঃ শোকঃ। বলো—

ওঁ আপ্যায়ন্তু মমাঙ্গানি বাক্‌প্রাণশ্চক্ষুঃশ্রোত্রমথো।

বলমিন্দ্রিয়াণি চ সর্ব্বাণি সর্ব্বং ব্রক্ষ্মৌপনিষদং।

মাহং ব্রহ্ম নিরাকুর্য্যাং মা মা ব্রহ্ম নিরাকরোৎ

অনিরাকরণমস্তু অনিরাকরণং মেহস্তু।

তদাত্মনি নিরতে য উপনিষৎসু ধর্ম্মাঃ

তে ময়ি সন্তু তে ময়ি সন্তু॥

উপনিষৎ-কথিত সর্ব্বান্তর্যামী ব্রহ্ম আমার বাক্য প্রাণ চক্ষু শ্রোত্র বল ইন্দ্রিয়, আমার সমুদয় অঙ্গকে পরিতৃপ্ত করুন! ব্রহ্ম আমাকে পরিত্যাগ করেন নাই, আমি ব্রহ্মকে পরিত্যাগ না করি, তিনি অপরিত্যক্ত থাকুন, তিনি আমা-কর্তৃক অপরিত্যক্ত থাকুন; সেই পরমাত্মায়-নিরত আমাতে উপনিষদের যে-সকল ধর্ম তাহাই হৌক্‌, আমাতে তাহাই হৌক্‌!

ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ। হরি ওঁ।