বঙ্কিমচন্দ্র
বিজ্ঞানের সাক্ষ্য দিয়া আপনার কৌলীন্য প্রমাণ করিবার যে অদ্ভুত চেষ্টা করিয়াছিল তাহা দেখিতে দেখিতে চারি দিকে ছড়াইয়া পড়িল। ইতিপূর্বে দীর্ঘকাল ধরিয়া থিয়সফিই আমাদের দেশে এই আন্দোলনের ভূমিকা প্রস্তু্‌ত করিয়া রাখিয়াছিল।

কিন্তু বঙ্কিমবাবু যে ইহার সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগ দিতে পারিয়াছিলেন তাহা নহে। তাঁহার ‘প্রচার’ পত্রে তিনি যে-ধর্মব্যাখ্যা করিতেছিলেন তাহার উপরে তর্কচূড়ামণির ছায়া পড়ে নাই, কারণ তাহা একেবারেই অসম্ভব ছিল।

আমি তখন আমার কোণ ছাড়িয়া আসিয়া পড়িতেছিলাম, আমার তখনকার এই আন্দোলনকালের লেখাগুলিতে তাহার পরিচয় আছে। তাহার কতক বা ব্যঙ্গকাব্যে, কতক বা কৌতুকনাট্যে, কতক বা তখনকার সঞ্জীবনী কাগজে পত্রআকারে বাহির হইয়াছিল। ভাবাবেশের কুহক কাটাইয়া তখন মল্লভূমিতে আসিয়া তাল ঠুকিতে আরম্ভ করিয়াছি।

সেই লড়ায়ের উত্তেজনার মধ্যে বঙ্কিমবাবুর সঙ্গেও আমার একটা বিরোধের সৃষ্টি হইয়াছিল। তখনকার ভারতী ও প্রচার-এ তাহার ইতিহাস রহিয়াছে; তাহার বিস্তারিত আলোচনা এখানে অনাবশ্যক। এই বিরোধের অবসানে বঙ্কিমবাবু আমাকে যে একখানি পত্র লিখিয়াছিলেন আমার দুর্ভাগ্যক্রমে তাহা হারাইয়া গিয়াছে— যদি থাকিত তবে পাঠকেরা দেখিতে পাইতেন, বঙ্কিমবাবু কেমন সম্পূর্ণ ক্ষমার সহিত এই বিরোধের কাঁটাটুকু উৎপাটন করিয়া ফেলিয়াছিলেন।



১ থিয়োসফিকাল সোসাইটির প্রথম কেন্দ্রস্থাপন বোম্বাইয়ে, ১৮৭৯; কলিকাতা শাখা, এপ্রিল ১৮৮২

২ দ্র ‘পত্র। সুহৃদ্বর শ্রীযুক্ত প্রিঃ স্থলচরবরেষু’ ও প্রথম সংস্করণ কড়ি ও কোমল-এর অন্যান্য কয়েকটি পত্রাকারে লিখিত কবিতা

৩ ‘আর্য ও অনার্য’, ‘সূক্ষ্মবিচার’, ‘আশ্রমপীড়া’, ‘গুরুবাক্য’ ইত্যাদি – হাস্যকৌতুক, রবীন্দ্র-রচনাবলী ৬

(সুলভ ৩) দ্র বালক (১২৯২) এবং ভারতী (১২৯৩)

৪ প্রকাশ,? ১৮৮৩, সাপ্তাহিক পত্র, সম্পাদক কৃষ্ণকুমার মিত্র

৫ ‘পত্র। শ্রীমান দামু বসু এবং চামু বসু সম্পাদক সমীপেষু’ – সঞ্জীবনী, ১২৯১-৯২

দ্র কড়ি ও কোমল, প্রথম সংস্করণ, পৃ ১৩১-৩৭

৬ দ্র ‘নব্য-হিন্দু-সম্প্রদায়’, তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা, শক ১৮০৬ [১২৯১] ভাদ্র

‘একটি পুরাতন কথা’, ‘কৈফিয়ৎ’ – ভারতী, অগ্রহায়ণ পৌষ ১২৯১। তৎকালীন অন্যান্য প্রবন্ধ