গঙ্গাতীর
থাকে— অন্তরের গভীরতম অলক্ষ্য প্রদেশের সেই যুদ্ধের ইতিহাসই অস্পষ্ট ভাষায় সন্ধ্যাসংগীতে প্রকাশিত হইয়াছে। সকল সৃষ্টিতেই যেমন দুই শক্তির লীলা, কাব্যসৃষ্টির মধ্যেও তেমনি। যেখানে অসামঞ্জস্য অতিরিক্ত অধিক, অথবা সামঞ্জস্য যেখানে সম্পূর্ণ সেখানে কাব্য লেখা বোধ হয় চলে না। যেখানে অসামঞ্জস্যে বেদনাই প্রবলভাবে সামঞ্জস্যকে পাইতে ও প্রকাশ করিতে চাহিতেছে, সেইখানেই কবিতা বাঁশির অবরোধের ভিতর হইতে নিশ্বাসের মতো রাগিণীতে উচ্ছ্বসিত হইয়া উঠে।

সন্ধ্যাসংগীতের জন্ম হইলে পর সূতিকাগৃহে উচ্চস্বরে শাঁখ বাজে নাই বটে কিন্তু তাই বলিয়া কেহ যে তাহাকে আদর করিয়া লয় নাই, তাহা নহে। আমার অন্য কোনো প্রবন্ধে আমি বলিয়াছি— রমেশ দত্ত মহাশয়ের জ্যেষ্ঠা কন্যার বিবাহসভার দ্বারের কাছে বঙ্কিমবাবু দাঁড়াইয়া ছিলেন; রমেশবাবু বঙ্কিমবাবুর গলায় মালা পরাইতে উদ্যত হইয়াছেন এমন সময়ে আমি সেখানে উপস্থিত হইলাম। বঙ্কিমবাবু তাড়াতাড়ি সে মালা আমার গলায় দিয়া বলিলেন, “এ মালা ইঁহারই প্রাপ্য— রমেশ,তুমি সন্ধ্যাসংগীত পড়িয়াছ? ” তিনি বলিলেন, “না”। তখন বঙ্কিমবাবু সন্ধ্যাসংগীতের কোনো কবিতা সম্বন্ধে যে-মত ব্যক্ত করিলেন তাহাতে আমি পুরস্কৃত হইয়াছিলাম।



১ বাংলা ১২৮৮ [১৮৮২]

“ইহার অধিকাংশ কবিতাই গত দুই বংসরের মধ্যে রচিত” – বিঞ্জাপন, ১ম সংস্করণ

২ ‘বঙ্কিমচন্দ্র’, সাধনা, বৈশাখ ১৩০১। দ্র গ্রন্থপরিচয় ৯, পৃ ৫৫৫ (সুলভ সং ৫, পৃ ৮১০)

৩ রমেশচন্দ্র দত্ত (১৮৪৮-১৯০৯)

৪ ২০নং বীডন স্ট্রীট বাড়িতে কমলা দেবীর সহিত প্রমথনাথ বসুর বিবাহে, শ্রাবণ ১২৮৯ [১৮৮২]