পত্রপুট

                               ঝট্‌পট্‌ করছে পাখাদুটো।

         নদীপথে ঝড়ের মুখে বাঁশঝাড়ের লুটোপুটি,

                    ডালগুলো ডাইনে বাঁয়ে আছাড় খায়,

                              দোহাই পাড়ে মরিয়া হয়ে।

   তীক্ষ্ম হাওয়া সাঁই সাঁই শান দিচ্ছে আর চালাচ্ছে ছুরি

                     অন্ধকারের পাঁজরের ভিতর দিয়ে।

                         জলে স্থলে শূন্যে উঠেছে

                                   ঘুরপাক-খাওয়া আতঙ্ক।

 

   হঠাৎ সোঁদা গন্ধের দীর্ঘনিশ্বাস উঠল মাটি থেকে,

              মুহূর্তে এসে পড়ল বৃষ্টি প্রবল ঝাপটায়,

                      হাওয়ার চোটে গুঁড়োনো   জলের ফোঁটা,

                               পাতলা পর্দায় ঢেকে ফেললে সমস্ত বন,

                                       আড়াল করলে মন্দিরের চুড়ো,

                     কাঁসর-ঘন্টার ঢং ঢং শব্দের দিল মুখচাপা।

                          রাত তিন পহরে থেমে গেল ঝড়বৃষ্টি,

                          কালি হয়ে এল অন্ধকার নিকষ-পাথরের মতো ;

                                      কেবলই চলল ব্যাঙের ডাক,

                                        ঝিঁ ঝিঁ পোকার শব্দ,

                           জোনাকির মিটিমিটি আলো,

                             আর যেন স্বপ্নে-আঁতকে-ওঠা দমকা হাওয়ায়

                                থেকে থেকে জল-ঝরা ঝাউয়ের ঝর্‌ঝরানি।