পত্রপুট

         তাই চুপচাপ বসে আছি এই চাতালে

                               কেদারটা টেনে নিয়ে।

 

                      দেখলেম বর্ষা গেল চলে,

                               কালো ফরাশটা নিল গুটিয়ে।

                      ভাদ্রশেষের নিরেট গুমটের উপরে

                                থেকে থেকে ধাক্কা লাগল

                                    সংশয়িত উত্তরে হাওয়ার।

         সাঁওতাল ছেলেরা শেষ করেছে কেয়াফুল বেচা,

            মাঠের দূরে দূরে ছড়িয়ে পড়েছে গোরুর পাল,

                      শ্রাবণভাদ্রের ভূরিভোজের অবসানে

                          তাদের ভাবখানা অতি মন্থর ;

         কী জানি, মুখ-ডোবানো রসালো ঘাসেই তাদের তৃপ্তি

             না, পিঠে কাঁচা রৌদ্র লাগানো আলস্যে।

 

হাওয়া-বদলের দায় আমার নয় ;

       তার জন্যে আছেন স্বয়ং দিক্‌পালেরা

                রেলোয়ে স্টেশনের বাইরে,

তাঁরাই বিশ্বের ছুটিবিভাগে রসসৃষ্টির কারিগর।

        অস্ত-আকাশে লাগল তাঁদের নতুন তূলির টান

                অপূর্ব আলোকের বর্ণচ্ছটায়।

প্রজাপতির দল নামালেন

      রৌদ্রে ঝলমল ফুলভরা টগরের ডালে,

পাতায় পাতায় যেন বাহবাধ্বনি উঠেছে

      ওদের হালকা ডানার এলোমেলো তালের রঙিন নৃত্যে।

আমার আঙিনার ধারে ধারে এতদিন চলেছিল

      এক-সার জুঁই-বেলের ফোটা-ঝরার ছন্দ,

সংকেত এল, তারা সরে পড়ল নেপথ্যে ;

      শিউলি এল ব্যতিব্যস্ত হয়ে ;

             এখনো বিদায় মিলল না মালতীর।

কাশের বনে লুটিয়ে পড়েছে শুক্লাসপ্তমীর জ্যোৎস্না —

      পূজার পার্বণে চাঁদের নূতন উত্তরী