জন্মদিনে

তাদের সবার সাথে আছে মোর এইমাত্র যোগ —

সঙ্গ পাই সবাকার, লাভ করি আনন্দের ভোগ,

গীতভারতীর আমি পাই তো প্রসাদ

নিখিলের সংগীতের স্বাদ।

সব চেয়ে দুর্গম-যে মানুষ আপন অন্তরালে,

তার কোনো পরিণাপ নাই বাহিরের দেশে কালে।

সে অন্তরময়

অন্তর মিশালে তবে তার অন্তরের পরিচয়।

পাই নে সর্বত্র তার প্রবেশের দ্বার,

বাধা হয়ে আছে মোর বেড়াগুলি জীবনযাত্রার।

চাষি খেতে চালাইছে হাল,

তাঁতি বসে তাঁত বোনে, জেলে ফেলে জাল —

বহুদূরপ্রসারিত এদের বিচিত্র কর্মভার

তারি ‘ পরে ভর দিয়ে চলিতেছে সমস্ত সংসার।

অতি ক্ষুদ্র অংশে তার সম্মানের চিরনির্বাসনে

সমাজের উচ্চ মঞ্চে বসেছি সংকীর্ণ বাতায়নে।

মাঝে মাঝে গেছি আমি ও পাড়ার প্রাঙ্গণের ধারে,

ভিতরে প্রবেশ করি সে শক্তি ছিল না একেবারে।

জীবনে জীবন যোগ করা

না হলে কৃত্রিম পণ্যে ব্যর্থ হয় গানের পসরা।

তাই আমি মেনে নিই সে নিন্দার কথা

আমার সুরের অপূর্ণতা।

আমার কবিতা, জানি আমি,

গেলেও বিচিত্র পথে হয় নাই সে সর্বত্রগামী।

কৃষাণের জীবনের শরিক যে জন,

কর্মে ও কথায় সত্য আত্মীয়তা করেছে অর্জন,

যে আছে মাটির কাছাকাছি,

সে কবির বাণী-লাগি কান পেতে আছি।

সাহিত্যের আনন্দের ভোজে

নিজে যা পারি না দিতে নিত্য আমি থাকি তারি খোঁজে।

সেটা সত্য হোক,

শুধু ভঙ্গি দিয়ে যেন না ভোলায় চোখ।