ছড়ার ছবি
এসেছে যেই দুলালচাঁদের গোলা খেলার মাঠে
অকারণে চাবুক নিয়ে দুলাল এল তেড়ে ;
মাধো বললে, “ মারলে কুকুর ফেলব তোমায় পেড়ে। ”
উঁচিয়ে চাবুক দুলাল এল, মানল নাকো মানা,
চাবুক কেড়ে নিয়ে মাধো করলে দ-ুতিনখানা।
দাঁড়িয়ে রইল মাধো, রাগে কাঁপছে থরোথরো,
বললে, “ দেখব সাধ্য তোমার, কী করবে তা করো। ”
দুলাল ছিল বিষম ভীতু, বেগ শুধু তার পায়ে ;
নামের জোরেই জোর ছিল তার, জোর ছিল না গায়ে।
 
দশ-বিশজন লোক লাগিয়ে বাপ আনলে ধরে,
মাধোকে এক খাটের খুরোয় বাঁধল কষে জোরে।
বললে, “ জানিসনেকো বেটা, কাহার অন্ন ধারিস,
এত বড়ো বুকের পাটা, মনিবকে তুই মারিস।
আজ বিকালে হাটের মধ্যে হিঁচড়ে নিয়ে তোকে,
দুলাল স্বয়ং মারবে চাবুক, দেখবে সকল লোকে। ”
মনিববাড়ির পেয়াদা এল দিন হল যেই শেষ।
দেখলে দড়ি আছে পড়ি, মাধো নিরুদ্দেশ।
মাকে শুধায়, “ এ কী কাণ্ড। '   মা শুনে কয়, ‘ নিজে
আপন হাতে বাঁধন তাহার আমিই খুলেছি যে।
মাধো চাইল চলে যেতে ; আমি বললেম, যেয়ো,
এমন অপমানের চেয়ে মরণ ভালো সেও। ”
স্বামীর 'পরে হানল দৃষ্টি দারুণ অবজ্ঞার ;
বললে, “ তোমার গোলামিতে ধিক্‌ সহস্রবার। ”
 
পেরোলো বিশ-পঁচিশ বছর ; বাংলাদেশে গিয়ে
আপন জাতের মেয়ে বেছে মাধো করল বিয়ে।
ছেলে মেয়ে চলল বেড়ে, হল সে সংসারী ;
কোন্‌খানে এক পাটকলে সে করতেছে সর্দারি।
এমন সময় নরম যখন হল পাটের বাজার
মাইনে ওদের কমিয়ে দিতেই, মজুর হাজার হাজার
ধর্মঘটে বাঁধল কোমর ; সাহেব দিল ডাক ;